জার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠানোর হুমকি বতসোয়ানার
জার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মোকগউইৎসি মাসিসি । হান্টিং ট্রফি আমদানির ওপর জার্মানি বিধিনিষেধ আরোপ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার (৩ এপ্রিল) এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিনোদনের জন্য বন্যপ্রাণী শিকারকে বলা হয় ট্রফি হান্টিং। ট্রফি শিকারিরা সাধারণত বন্যপ্রাণী শিকার করার পর তাদের বিভিন্ন অংশ, যেমন- মাথা, চামড়া, শিং ও দাঁত ইত্যাদি, সংগ্রহ করে পরে নিজেদের বীরত্ব ও সফলতার প্রতীক হিসেবে ট্রফি হিসেবে সংরক্ষণ করেন।
জার্মানি হান্টিং ট্রফির বড় আমদানিকারক হলেও চলতি বছরের শুরুর দিকে আমদানিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কথা চিন্তা-ভাবনা করার কথা জানায় দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
বতসোয়ানায় হাতির সংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও ট্রফি আমদানি নিষিদ্ধ করার জন্য জার্মান সরকার, বিশেষ করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন আফ্রিকান এ নেতা।
জার্মান দৈনিক বিল্ডকে মাসিসি বলেন, 'বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার কারণে বতসোয়ানায় হাতির সংখ্যা বেড়ে গেছে। শিকার করার মাধ্যমেই কেবল হাতির সংখ্যা খানিকটা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। জার্মানরা যেভাবে আমাদেরকে বন্য প্রাণীর সঙ্গে থাকতে বলে, তাদেরও সেভাবেই বাস করা উচিত।'
মাসিসির মতে, বতসোয়ানায় হাতির সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজারে উন্নীত হয়েছে। হাতির পাল সম্পত্তির ক্ষতি করছে, ফসল খাচ্ছে এবং পদদলিত করে বাসিন্দাদের ক্ষতি করছে। ট্রফি হান্টিং নিয়ন্ত্রণ করলে সমস্যাটিকে আরও খারাপ করে তুলবে এবং বতসোয়ানার মানুষকে আরও দরিদ্র করে তুলবে।
মাসিসি জানান, অতিরিক্ত হাতির সংখ্যা মোকাবেলায় বতসোয়ানা এরই মধ্যে অ্যাঙ্গোলায় ৮ হাজার এবং মোজাম্বিকে আরও ৫০০ হাতি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
এ সময় তিনি হাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আরও ২০ হাজার হাতি জার্মানিতে পাঠানোর কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'বতসোয়ানা জার্মানিকেও এমন উপহার দিতে চায়। আমরা রসিকতা করছি না এবং উপহার গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা জার্মানদের কাছ থেকে না শুনতে চাই না।'
বতসোয়ানা বিশ্বের অন্য যে কোনও দেশের চেয়ে বন্যপ্রাণী রক্ষায় আরও বেশি কাজ করে বলে দাবি করেন তিনি। জার্মান মন্ত্রীকে বতসোয়ানা বন্যপ্রাণী সুরক্ষা পরিদর্শন করার জন্য আমন্ত্রণও জানান।
বার্লিনের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, বতসোয়ানা এ বিষয়ে জার্মানির কাছে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। তবে বতসোয়ানাসহ আমদানি বিধিতে ক্ষতিগ্রস্ত আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে মন্ত্রণালয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান ওই মুখপাত্র।
উল্লেখ্য, বতসোয়ানা ২০১৪ সালে ট্রফি হান্টিং নিষিদ্ধ করলেও স্থানীয় সম্প্রদায়ের চাপে ২০১৯ সালে আবার তা চালু করে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন