ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বেড়ে গেল তেল ও সোনার দাম
ইরানে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার বিষয়টি মার্কিন প্রশাসন নিশ্চিত করার পরেই বেড়েছে তেল ও সোনার দাম।
তেল ক্রয়ের আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১.৮ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৮৮ ডলার হয়েছে। অন্যদিকে সোনার দাম সংক্ষিপ্তভাবে রেকর্ড দাম ছোঁয়ার প্রায় কাছাকাছি গিয়ে বর্তমানে আউন্স প্রতি দুই হাজার চারশ ডলারে পৌঁছেছে।
বিনিয়োগকারীরা গত সপ্তাহে ইরান ইসরায়েলের ওপর সরাসরি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর থেকেই ইসরায়েলের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছেন। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যা এখন উদ্বেগের বিষয়। তেলের দাম প্রাথমিকভাবে ৩.৫ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, দেশটির ইসফাহান প্রদেশে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেলেও সেখানে 'কোন ক্ষয়ক্ষতি' হয়নি।
তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে। অনেক দেশ পেট্রোল এবং ডিজেলের মতো জ্বালানির জন্য তেলের ওপর উচ্চ মাত্রায় নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ জ্বালানি ও শক্তি খরচ বৃদ্ধি।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় ওমান ও ইরানের মধ্যবর্তী হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক থাকবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুট কারণ বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ হরমুজ প্রণালি দিয়ে সরবরাহ করা হয়।
তেল উৎপাদনকারী কার্টেল ওপেক-এর সদস্য দেশ সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং ইরাক এ প্রণালি দিয়েই অধিকাংশ তেল রপ্তানি করে। ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুসারে, ইরান বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং ওপেকের তৃতীয় বৃহত্তম সদস্য।
বন্দ ইনসাইটসের জ্বালানি বাজার বিশেষজ্ঞ বন্দনা হরি বলেন, "তেলের দামের প্রাথমিক বৃদ্ধি 'ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ বেড়ে যাওয়ার যে আশঙ্কা' তার সামান্য প্রতিক্রিয়া। সাম্প্রতিক ঘটনা থেকে যা দেখা যাচ্ছে তা হলো, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির ভঙ্গুর ও অস্থির দশা।"
এ অঞ্চলের পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে এশিয়ার শেয়ারবাজারে, কমেছে অনেক দেশেরই শেয়ারের সূচক। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ২.৭ শতাংশ, হংকংয়ের হ্যাং স্যাং সূচক ১.২ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক প্রায় ১.৭ শতাংশ কমেছে।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়