লোকসভা নির্বাচনে নাগাল্যান্ডের ৬ জেলায় একজনও ভোট দিলেন না
ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। গত ১৯ এপ্রিল নাগাল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় ছয়টি জেলায় ভোটগ্রহণ কর্মীরা বুথে নয় ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু তারপরও ওই অঞ্চলের চার লাখ ভোটারদের একজনও ভোট দিতে যাননি।
'ফ্রন্টিয়ার নাগাল্যান্ড টেরিটরি'র (এফএনটি) দাবিতে একটি সংগঠনের দেওয়া ভোট বয়কটের ডাকের পর ওই অঞ্চলের চার লাখ ভোটারের একজনও ভোট দেননি। রাজ্যটির ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম।
মুখ্যমন্ত্রী নিফিউ রিও গত ১৯ এপ্রিল বলেছেন, ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশনের (ইএনপিও) এফএনটির দাবিতে রাজ্য সরকারের কোনো আপত্তি নেই। কারণ রাজ্য সরকারও ইতিমধ্যে ওই অঞ্চলের জন্য স্বায়ত্তশাসিত ক্ষমতার সুপারিশ করেছে।
ইএনপিও হচ্ছে ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাতটি উপজাতীয় সংগঠনের শীর্ষ সংস্থা।
কর্মকর্তারা জানান, ১৯ এপ্রিল জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবা ছাড়া পূর্ব নাগাল্যান্ডের প্রধান সড়কে কোনো মানুষ বা যানবাহন চলাচল করেনি।
নাগাল্যান্ডের অতিরিক্ত প্রধান নির্বাচনি কর্মকর্তা (সিইও) আওয়া লরিং বলেন, ২০টি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত ওই অঞ্চলের ৭৩৮টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টার পর্যন্ত ভোটগ্রহণ কর্মীরা বুথে ছিলেন। সিইওর কার্যালয় সূত্র জানায়, ওই নয় ঘণ্টায় কেউ ভোট দিতে আসেননি। এমনকি পূর্ব নাগাল্যান্ডের ২০ জন বিধায়কও ভোট দেননি।
নাগাল্যান্ডের ১৩.২৫ লাখ ভোটারের মধ্যে পূর্ব নাগাল্যান্ডের ছয়টি জেলায় ৪ লাখ ৬৩২ জন ভোটার রয়েছেন।
সরকার নাগাল্যান্ডের ওই ছয়টি জেলায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করতে পারেনি—এই অভিযোগে ইএনপিও ওই জেলাগুলোকে নিয়ে একটি পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, এ অঞ্চলটি রাজ্যের বাকি অংশের সমতুল্য হওয়ার জন্য যাতে পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক প্যাকেজ পায়, সেজন্য রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার সুপারিশ করেছে।
ভোট না দেওয়ার জন্য পূর্ব নাগাল্যান্ডের ২০ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা সংঘাত চাই না। দেখা যাক কী হয়।'
ভারতের লোকসভায় নাগাল্যান্ডের আসন মাত্র একটি। ৫৪৩ আসনের লোকসভা নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য ২৭২টি আসনের প্রয়োজন।
এবার সাত ধাপে ৪৪ দিন ধরে চলবে এই নির্বাচন। প্রথম ধাপে ১৯ এপ্রিল ভোটগ্রহণ হয়েছে ১০২ আসনে। আগামী ১ জুন শেষ ধাপে ৫৬ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা হবে ৪ জুন।