বিশ্বের যেকোনো স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সক্ষমতা আছে ৫টি দেশের
সেন্টার ফর স্ট্রেটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসের সহযোগী পরিচালক ইয়ান উইলিয়ামস এর মতে, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারকারী দেশের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অঞ্চলভিত্তিক অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।
এসব ক্ষেপণাস্ত্র উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানোর জন্য এগুলো আরও নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। তাছাড়া এসব উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র জঙ্গি সংগঠন বা উগ্রবাদীদের হাতে পড়ারও সম্ভাবনা থেকে যায়।
গত দুই দশক ধরে ক্ষেপণাস্ত্রে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে এমন অনেক দেশই এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত।
প্রতিবেশী দেশের হুমকি থেকে বাঁচার জন্য বেশ কিছু দেশ ক্ষেপণাস্ত্রে বিনিয়োগ করে আসলেও এর বৈশ্বিক পরিণতি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯০ সালে উত্তর কোরিয়ার একটি ক্ষেপণাস্ত্র যেখানে ৭৪৫ মাইল পথ পাড়ি দিতে পারতো সেটি বর্তমানে ৮ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে পারে। ফলে সেগুলো বিশ্বের অনেক দেশেরই মূল ভূখণ্ডে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম। দক্ষিণ কোরিয়াও এ সময়ে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়িয়েছে।
ইরান, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তানের মত দেশের শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি রয়েছে এবং তাদের অনুরূপ ক্ষেপণাস্ত্র থেকে বোঝা যায় দেশগুলো এসব ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে অতীতে প্রযুক্তি ভাগাভাগি করেছে।
পাকিস্তান ১৯৯০-এর দশকে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি জোরদার করেছিল এবং সম্ভবত চীনের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছিল। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান প্রধান আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর সক্ষমতা অর্জন করেছিল।
গত দুই দশকে ভারত পাকিস্তান এবং চীনের বেশিরভাগ অংশকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর ক্ষমতা অর্জন করেছে। ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে রাশিয়ার সাথে হাত মিলিয়েছে ভারত।
সৌদি আরব ও ইসরায়েলের ১৯৯০ সালের আগেই ইরানে হামলা চালানোর সক্ষমতা ছিল। কিন্তু ইরান এখন উত্তর কোরিয়া থেকে প্রাপ্ত প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে সক্ষম।
ভারত এবং উত্তর কোরিয়া উভয় দেশই সাবমেরিন-চালিত ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে যাতে তারা সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলার জন্য তাদের ক্ষেপণাস্ত্র লুকিয়ে রাখতে পারে।
মিলিশিয়া বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার সেটিও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নভেম্বরে ইয়েমেন থেকে নিক্ষেপ করা একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সৌদি আরবের রাজধানী পর্যন্ত পৌঁছেছে। ইরান ও হিজবুল্লাহ সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হুথি বিদ্রোহীরা ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করেছিল।
আরব লীগ ২০১৫ সালে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে সৌদি আরবে অসংখ্য ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার জন্য হুতিদের অভিযুক্ত করেছে। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র ছিল স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র।
ইয়েমেন থেকে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের মতো দেশগুলোর অস্ত্র কর্মসূচিতে তাৎপর্যপূর্ণ। কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্তার রোধ করার প্রতিকূলতাকে তুলে ধরে।
উত্তর কোরিয়া স্কাডের উপর ভিত্তি করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি সিরিজ তৈরি করেছিল যার মধ্যে কয়েকটি অন্যান্য দেশের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়