২০২৯ সালের পর থেকে মানুষ চিরকাল বেঁচে থাকবে: গুগলের প্রধান ভবিষ্যৎবিদ রে কুর্জওয়েল
গুগলের প্রধান ভবিষ্যৎবিদ রে কুর্জওয়েল প্লেবয়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আগামী কয়েক দশক কেমন হবে বলে তিনি মনে করেন, তা তুলে ধরেছেন।
কুর্জওয়েল দ্য সিঙ্গুলারিটি বা প্রযুক্তিগত এককতা'র ধারণার সবচেয়ে বড় সমর্থকদের একজন। দ্য সিঙ্গুলারিটি বলতে সেসময়কে বোঝানো হয়, যখন মানুষ প্রযুক্তির সহায়তায় চিরকাল বেঁচে থাকবে বলে মনে করা হয়।
তার হিসাব অনুযায়ী ২০৪৫ সালের মধ্যে প্রযুক্তিগত এককতা ঘটবে।
কুর্জওয়েল বলেন, 'সেসময় ননবায়োলজিক্যাল ইন্টেলিজেন্স এমন এক স্তরে পৌঁছাবে, যা বর্তমানের সব মানব বুদ্ধিমত্তার চেয়ে বিলিয়ন গুণ বেশি শক্তিশালী।'
প্লেবয়কে তিনি বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি ২০২৯ সালের দিকে আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাব, যখন চিকিৎসা প্রযুক্তির কল্যাণে প্রতি বছর আপনাদের আয়ু এক বছর করে বাড়বে।'
এই ভবিষ্যৎবাণীকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য আগামী ৩০ বছরে অনেকগুলো বিষয়ে অভাবনীয় উন্নতি ঘটতে হবে। তবে কুর্জওয়েল তার ভবিষ্যদ্বাণীর ব্যাপারে আশাবাদী।
তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে ২০২৯ সালের মধ্যে ন্যানো বট'গুলো আমাদের আমাদের দেহে বাস করবে। ধমনি দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় এই মাইক্রোস্কোপিক রোবটগুলো আমাদের সুস্থ রাখবে (ক্যান্সারযুক্ত কোষ এবং আটকে থাকা ধমনীর মতো সমস্যাগুলো সমাধান করে) এবং সীমাবদ্ধতা দূর করতে মানুষের মস্তিষ্ককে 'ক্লাউডে' রাখা সম্ভব হবে।
তিনি এই পরিবর্তনকে আমাদের বিবর্তনের পরবর্তী ধাপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
কুর্জওয়েল বলেন, একইভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরা ২ মিলিয়ন বছর আগে ফ্রন্টাল কর্টেক্স ব্যবহার করার মাধ্যমে বিবর্তিত হয়েছিল।
তার মতে, এর সুফল হবে অভাবনীয়।
তিনি প্লেবয়কে বলেন, 'আমরা বর্তমানের চেয়ে যোগাযোগের আরও গভীর ফর্ম তৈরি করতে সক্ষম হব। যেমন: আরও গভীর সংগীত এবং মজাদার কৌতুক প্রভৃতি সৃষ্টি। আমরা আরও মজা করব। আমরা আরও আবেদনময় হব। ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশে আমরা আরও পারদর্শী হব।'
তার ভবিষ্যদ্বাণীর সমর্থনে কুর্জওয়েল দুটি বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
প্রথমটি হলো প্রযুক্তিগত অগ্রগতির হার: ১৯৬০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে এমআইটিতে তার ব্যবহৃত ১১ মিলিয়ন ডলারের কম্পিউটারের চেয়ে, তার বর্তমান অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি অনেক ছোট, আরও শক্তিশালী এবং কম ব্যয়বহুল।
তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি আরও ছোট, আরও শক্তিশালী ও সস্তা হতে থাকবে।
দ্বিতীয়টি হলো কানেকটিকাটের জোসলিন ডায়াবেটিস সেন্টারে গবেষণারত একটি বিষয়। এই গবেষকেরা জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাণীদের ফ্যাট ইনসুলিন রিসেপ্টর জিনটি নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছে। ফলে এসব প্রাণী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত না হয়ে বা ওজন না বাড়িয়েও প্রচুর পরিমাণে খাবার খেতে পারবে।
তার ভবিষ্যৎবাণীর সত্যতা এখনও অজানা। তবে কুর্জওয়েল সিঙ্গুলারিটির আগে মারা যাওয়াকে তার নিজের ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করেন। তাই তিনি ২০৪৫ সাল পর্যন্ত টিকে থাকা এবং চিরকাল বেঁচে থাকার আশায় একটি কঠোর ডায়েট মেনে চলছেন।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি