ক্রোম ব্রাউজার বিক্রিতে বাধ্য করতে চাওয়ার খবরে গুগলের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন গুগলকে তাদের ইন্টারনেট ব্রাউজার ক্রোম বিক্রিতে বাধ্য করতে চায় মার্কিন বিচার বিভাগ (ডিওজে)। সেজন্য বিচারকের কাছে আবেদন করা হবে বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
গত সোমবার ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। এর আগে গত আগস্ট মাসে একটি মামলার রায়ে বিচারক ঘোষণা করেছিলেন যে, গুগল অবৈধভাবে সার্চ মার্কেটে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করেছে।
একইসাথে গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে পদক্ষেপ নিতেও আদালতের কাছে আবেদন জানাবে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
গুগল সার্চ ব্যবহার করে ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট দেখার অভিজ্ঞতা ও বিজ্ঞাপনের ধরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এই ব্রাউজার গুগলের বিজ্ঞাপন ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি বিশ্বব্যাপী প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ব্রাউজার মার্কেট দখল করে রেখেছে।
ক্রোমের বিষয়টি নিয়ে দেশটির বিচার বিভাগ কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে গুগলের রেগুলেশন ডিপার্টমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি-অ্যান মুলহল্যান্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, "বিচার বিভাগ এমন একটি র্যাডিকাল এজেন্ডা সামনে আনছে যা এই মামলার আইনি বিষয়গুলোর অনেক বাইরে এবং এর ফলে ব্যবহারকারীদের ক্ষতি হবে। প্রযুক্তিগতভাবে গোটা বিশ্বকে যেখানে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা যুক্তরাস্ট্রের, সরকারি দখলদারি তাতে বাধা সৃষ্টি করছে।"
বাইডেন প্রশাসনের এমন নীতি বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেশ কড়া পদক্ষেপ। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় এই মামলার ওপর সেটার প্রভাব পড়তে পারে।
অন্যদিকে গুগল দাবি করেছে, তাদের সার্চ ইঞ্জিন মানের জন্য জনপ্রিয় হয়েছে৷ একইসাথে তারা বড় কোম্পানিগুলোর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিযোগিতা বাড়াতে যদি অন্য কোনও সমাধান পাওয়া যায়, তা হলে পরবর্তীকালে মার্কিন সরকার বিবেচনা করবে ক্রোম ব্রাউজ়ার বিক্রি জরুরি কি-না।
তদন্ত অনুযায়ী, গুগল বিভিন্ন স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানির সাথে যে 'গোপন' চুক্তি করেছে তাতে ব্রাউজ়ার, আইফোন ও অন্য ডিভাইসগুলিতে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন ডিফল্ট অপশন হিসেবে রয়েছে। এর ফলে ব্যবহারকারীর সমস্ত তথ্যের নাগাল পেয়ে গুগল তার সার্চ ইঞ্জিনকে সারা বিশ্বে একচেটিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
আগস্টের ঐ রায় অনুযায়ী, ২০২০ সালে ইউএস অনলাইন সার্চ বাজারের ৯০ শতাংশ গুগলের দখলে ছিল। মোবাইল ডিভাইসের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি, ৯৫ শতাংশ। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে গুগল আবেদন করবে বলেই আশা করা হচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে আইনি লড়াই বহু বছর ধরে চলতে পারে।
বাজারে কোনো সংস্থার একচেটিয়া আধিপত্য রুখতে 'আলিবাবা'র বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিল চীন। এবার যুক্তরাষ্ট্র একই পথে হাঁটতে চলছে কি-না সেটাই দেখার বিষয়।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান