প্রধান একটি অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে তালেবানকে আমন্ত্রণ রাশিয়ার
রাশিয়ার একটি প্রধান অর্থনৈতিক সম্মেলন– সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে তালেবানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে রুশ সরকার। এটি রাশিয়ার সর্ববৃহৎ বার্ষিক অর্থনৈতিক ফোরাম।
আফগানিস্তানের তালেবানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে চায় রাশিয়া। তারই ইঙ্গিত হিসেবে এই আমন্ত্রণ।
আজ সোমবার (২৭ মে) রাশিয়ার একজন শীর্ষ কূটনীতিক একথা জানিয়েছেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় এশীয় বিভাগের পরিচালক জামির কাবুলভ বার্তাসংস্থা তাস নিউজ এজেন্সিকে বলেন, আগামী ৫ থেকে ৮ জুন অনুষ্ঠেয় সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে তালেবান সরকারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আফগান নেতারা মূলত রাশিয়া থেকে তেলপণ্য কিনতে আগ্রহী।
কাবুলভ বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্র ও বিচার-বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে অবহিত করেছেন। এরপর তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের বিরুদ্ধে দুই দশক ধরে যুদ্ধ করেছে তালেবান। অবশেষে ২০২১ সালের আগস্টে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতায় ফেরে। রাশিয়ায় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ তালেবান। তবে মস্কো ধীরে ধীরে কাবুলের নতুন শাসকদের সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহী ও বিনিয়োগ ব্যাংকাররা যোগ দিতেন। কিন্তু, যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমা বিশ্বের সাথে মস্কোর সম্পর্কের গভীর অবনতি হয়েছে। ১৯৬২ সালের কিউবার মিসাইল সংকটের পরে বর্তমানেই সবচেয়ে তলানিতে রয়েছে এই সম্পর্ক।
ফলে পশ্চিমা বিনিয়োগকারীরা আর রাশিয়ায় আসছেন না। অন্যদিকে রাশিয়ার বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য তাঁদের জায়গায় আসছেন চীন, ভারত, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসায়ীরা।
১৯৮০'র দশকে আফগানিস্তানে রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধ করেছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। তবে মস্কোকেও হার মেনে পিছু হটতে হয়েছিল। রুশ সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তান ভয়াবহ এক গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। দেশজুড়ে বিরাজ করে অরাজকতা। এরমধ্যে ১৯৯৪ সালে কান্দাহারে গঠিত হয় তালেবান।
তালেবান সোভিয়েত বিরোধী মুজাহেদিন গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে, এবং এক পর্যায়ে ক্ষমতা দখল করে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে আল কায়েদার ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরে সামরিক অভিযান চালিয়ে তালেবানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর ২০০৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছিল মস্কো। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় তালেবানের সাথে মস্কোর অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ থাকার সংবাদও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে এসেছে।