গাজায় শিশুদের নির্যাতন করায় জাতিসংঘের ‘কালো তালিকায়’ যুক্ত হচ্ছে ইসরায়েল
সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর নির্যাতন করা দেশগুলোকে 'কালো তালিকাভুক্ত' করে থাকে জাতিসংঘ। এবার গাজায় সহিংসতার জেরে এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে ইসরায়েলের নাম।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি দূত গিলাদ এরদান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের পক্ষ থেকে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি জানানো হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে হাজার হাজার শিশু নিহত হয়েছে। শিশুদের ওপর এমন আচরণে নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। যদিও জাতিসংঘের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে তেল আবিব।
গিলাদ এরদান বলেন, "এটা নিতান্তই একটি আপত্তিকর ও ভুল সিদ্ধান্ত। আমি এই লজ্জাজনক সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া বলেছি যে, আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক বাহিনী। বরং একমাত্র কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছেন মহাসচিব যিনি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করেন এবং ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেন।"
এর প্রতিক্রিয়ায় মহাসচিব গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফানে ডুজারিক বলেন, "রাষ্ট্রদূত এরদানের ফোন কলের ভিডিও রেকর্ডিং এবং টুইটারে সেই রেকর্ডিংয়ের আংশিক প্রকাশ অগ্রহণযোগ্য। আমি এতে বেশ হতবাক হয়েছি। সত্যি বলতে এখানে আমার ২৪ বছরের কর্মজীবনে এমনটা দেখিনি।"
এদিকে জাতিসংঘের এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন। উপত্যকাটির সিনিয়র কর্মকর্তা রিয়াদ মালিকি বলেন, "বর্তমানে গাজার বিপর্যয় বিশ্ব খোলা চোখে দেখছে। যেখানে বিশেষ করে নারী ও শিশুদের লক্ষ্য করে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব ইসরায়েলকে 'কালো তালিকায়' না রাখার আর কোনো অজুহাত নেই।"
এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৬,৭০০ জন নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৫,৫৭১ জন শিশু।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানান, গাজায় খাদ্য, পানি, ওষুধ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহে ইসরায়েলের বিধিনিষেধ আরোপ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের কিছু অংশ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে হয়েছে।
সম্প্রতি ইউনিসেফ জানায়, গাজায় প্রতি ১০ জন ফিলিস্তিনি শিশুর মধ্যে নয়জন গুরুতর খাদ্য সংকটের মধ্যে বেঁচে আছে। ২০২০ সালেও যে পরিমাণ ছিল ১৩ ভাগ।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান