কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ‘ভয়াবহ ভুল’ করেছে ভারত: জাস্টিন ট্রুডো
ভারত সরকারের বিরুদ্ধে কানাডায় সহিংসতা তৈরির অভিযোগ তুলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিদেশি হস্তক্ষেপ সম্পর্কিত অনুসন্ধানের সময় ট্রুডো বলেন, ভারত কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে শিখ বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু করার "স্পষ্ট সংকেত" দিচ্ছে। এসময়, ভারতের কার্যকলাপকে "ভয়াবহ ভুল" বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভারত এবং কানাডা পরস্পরের শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করার পরেই এমন মন্তব্য করলেন তিনি। ২০২৩ সালের জুন মাসে ভ্যানকুভারে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যকার দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়।
পরবর্তীতে ট্রুডো জানান, নিজ্জারের হত্যার সঙ্গে ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পেয়েছে কানাডা । নিজ্জার একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন, যিনি স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত চারজন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেফতার করেছে কানাডার কর্তৃপক্ষ। তবে, হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে ভারত।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভারত আবারও নিজ্জার হত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ভারত নিজ্জারকে "জঙ্গি" হিসেবে চিহ্নিত করে এই অভিযোগকে "অসংগত" এবং রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য ভারতের বিরুদ্ধে একটি কুৎসা রচনার কৌশল বলে অভিহিত করেছে।
তবে বুধবারের শুনানিতে ট্রুডো বলেন, নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডটি ভারতীয় সরকারের একটি বিস্তৃত অপারেশনের অংশ, যেখানে ভারতীয় সরকারের প্রতিনিধিরা কানাডার ভিতরে বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তু করছেন।
একটি জাতীয় পুলিশ তদন্তের কথা উল্লেখ করে ট্রুডো বলেন, "কানাডিয়ানদের প্রতি সহিংসতা… ভারতীয় সরকার ঘটিয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে সরকার থেকে পরিচালিত হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, অভিযোগের মুখে ভারত সরকার কেবল তাদের আগ্রাসন বাড়িয়ে দিয়েছে।
কানাডার সরকার "এমন গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারের" বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে না চাইলেও ট্রুডো জানিয়েছেন, তিনি "কানাডার সার্বভৌমত্বের পক্ষে দাঁড়াতে" পিছু হটবেন না।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে একজন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যার চেষ্টা করার জন্য ভারত সরকারকে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিভাগ ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তর বিরুদ্ধে শিখ-আমেরিকান অ্যাক্টিভিসস্ট গুরপতভন্ত সিং পান্নুনকে লক্ষ্যবস্তু করে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল। এর সাথে একজন ভারতীয় সরকার কর্মচারী এবং অন্যান্যদের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করা হয়েছিল।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ষড়যন্ত্রের বিষয়ে তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে একটি কার্যকরী বৈঠক হয়েছে।