দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে বেরিয়ে যেতে বলা হলো দল থেকে
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার শাসক দলের নেতা প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে দল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে বড় রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি, কারণ প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করেন। তবে এই সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করা হলেও তা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
এ ঘটনায় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও বেড়েছে এবং তার অভিশংসনের দাবিও জোরালো হয়েছে। শাসক দলের নেতা এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ইউন সুককে দল ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা সংকটকে আরও গভীর করেছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউনের পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন। কিম মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে সামরিক আইন জারি ও তা দ্রুত প্রত্যাহারের ঘটনায় নিজের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চান।
পাশাপাশি, দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক আইন ঘোষণার ঘটনায় তদন্তের অংশ হিসেবে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিষয়টি থেকে স্পষ্ট, পরিকল্পনা সম্পর্কে অনেকেই অবগত ছিলেন না।
উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম সিওন-হো জানিয়েছেন, তিনি এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রথমবার জানেন সংবাদমাধ্যম থেকে। এই ঘটনায় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল মঙ্গলবার রাতে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করে দেশবাসীকে চমকে দেন। এশিয়ার এই গণতান্ত্রিক দেশে প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা প্রথমবারের মতো ঘটে।
রাতের টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট জানান, "রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি" এবং উত্তর কোরিয়ার হুমকির কারণে তিনি এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়, এ সিদ্ধান্ত বাইরের কোনো হুমকির কারণে নয়; বরং তার নিজস্ব রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলার চেষ্টা।
সামরিক আইন জারির পরপরই হাজারো মানুষ সিউলের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভে নামেন। এ সময় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা দ্রুত পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশনে মিলিত হয়ে সামরিক আইন প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাস করেন।
বিরোধীদের এই উদ্যোগে পরাজিত হয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ইউন পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত মেনে নেন এবং সামরিক আইন প্রত্যাহার করেন।