প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ান, না হলে বিপদ: ন্যাটো মহাসচিব
এখনই 'যুদ্ধকালীন মানসিকতা' গ্রহণের সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তে। ভবিষ্যতে রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলো পর্যাপ্ত ব্যয় করছে না বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। খবর বিবিসি'র।
ন্যাটো মহাসচিব বলেছেন, মস্কো দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা শুধু ইউক্রেন নয়, ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যদের জন্যও বড় ধরনের হুমকি। তিনি বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে তার জীবনের সবচেয়ে সংকটপূর্ণ সময় হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
রুত্তে বলেন, 'আমরা আগামী চার থেকে পাঁচ বছরে সামনে যে চ্যালেঞ্জ আসছে, তার জন্য প্রস্তুত নই।' অক্টোবর মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম কোনো বক্তৃতায় তিনি সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে প্রতিরক্ষা ব্যয় দ্রুত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তার এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নিতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, প্রতিরক্ষা ব্যয়ে ব্যর্থ নাটো সদস্যদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সুরক্ষা দিতে অনাগ্রহী হতে পারে।
ব্রাসেলসে একটি বক্তব্যে তিনি জানান, রাশিয়া তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে, যা ২০২৫ সালের মধ্যে তাদের বাজেটের এক-তৃতীয়াংশে পৌঁছাবে। তিনি স্নায়ু যুদ্ধের উদাহরণ টেনে বলেন, তখন ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো জিডিপির ৩ শতাংশের বেশি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করত।
রুত্তে স্পষ্টভাবে জানান, এখন প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে না পারলে ভবিষ্যতে যুদ্ধের জন্য আরও বড় মূল্য দিতে হবে। তিনি ন্যাটোর সদস্যদের মধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ক্ষেত্রে গড় ২ শতাংশ লক্ষ্য পূরণ না হওয়া নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
ন্যাটো অঞ্চলের সাধারণ জনগণের প্রতি সরাসরি আহ্বান জানিয়ে রুত্তে বলেন, 'আপনারা আপনাদের রাজনীতিবিদদের জানাবেন যে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানো এখন অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, আমাদের গণতন্ত্র এবং জীবনধারা রক্ষা করতে হলে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।'
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার পূর্ববর্তী সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্রাম্প ন্যাটো সদস্যদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে যে চাপ দিয়েছিলেন, তা সঠিক ছিল।
রুত্তে স্বীকার করেন, ইউরোপে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে। কারণ, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য এবং অভিবাসনের মতো ইস্যুগুলো তাদের কাছে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, বর্তমান সংকট মোকাবিলার জন্য প্রতিরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।