অস্ত্র জমা না দিলে কুর্দি ওয়াইপিজে যোদ্ধাদের সিরিয়ার মাটিতে ‘পুঁতে ফেলা হবে’: এরদোয়ান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধারা অস্ত্র জমা দেবে অথবা তাদের মাটিতে "পুঁতে ফেলা হবে।"
তুরস্ক-সমর্থিত সিরীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত চলছে। গত ৮ ডিসেম্বর সাবেক সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর এই সংঘাত আরও বেড়েছে।
আঙ্কারা বারবার বলেছে, কুর্দি ওয়াইপিজি মিলিশিয়াকে ভেঙে দিতে হবে। তুরস্ক মনে করে, ভবিষ্যতের সিরিয়ায় এই গোষ্ঠীর জন্য কোনো জায়গা নেই।
সিরিয়ার নেতৃত্ব পরিবর্তনের ফলে দেশটির প্রধান কুর্দি গোষ্ঠীগুলো বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এরদোয়ান বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ক্ষমতাসীন একে পার্টির সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, "বিচ্ছিন্নতাবাদী খুনিরা অস্ত্র জমা দেবে, অথবা তাদের অস্ত্রসহ সিরিয়ার মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের কুর্দি ভাইবোনদের সঙ্গে রক্তের দেয়াল তৈরি করতে চাওয়া এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে আমরা সম্পূর্ণ নির্মূল করব।"
তুরস্ক ওয়াইপিজি মিলিশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর প্রধান অংশ এবং নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-র একটি শাখা হিসেবে দেখে। পিকেকে ১৯৮৪ সাল থেকে তুর্কি সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে।
পিকেকে-কে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আঙ্কারা বারবার যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো মিত্রদের প্রতি ওয়াইপিজি-কে সমর্থন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
ইস্তাম্বুল থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক সিনেম কোসেওগ্লু বলেছেন, এরদোয়ানের এই বক্তব্য আশ্চর্যের নয়। এটি তুর্কি সরকারের আনুষ্ঠানিক নীতি।
তিনি জানান, ওয়াইপিজি পিকেকে-র "সিরীয় শাখা" হওয়ায় আঙ্কারা মনে করে, তারা হয় অস্ত্র ত্যাগ করবে, না হলে তারা লড়াই করবে এবং পরাজিত হবে।
এর আগে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিরিয়ার উত্তর এবং ইরাকে ২১ জন ওয়াইপিজি-পিকেকে যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে।
এসডিএফ কমান্ডার মজলুম আবদি প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন, পিকেকে যোদ্ধারা সিরিয়ায় অবস্থান করছে।
তিনি বলেন, তারা আইএসআইএল-এর (আইএসআইএস নামেও পরিচিত) বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করেছে এবং তুরস্কের সঙ্গে পূর্ণ যুদ্ধবিরতি হলে তারা নিজ দেশে ফিরে যাবে। তবে তিনি পিকেকে-র সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
এরদোয়ান জানিয়েছেন, তুরস্ক দ্রুত আলেপ্পোতে কনসুলেট খুলবে। তিনি জানান, আগামী গ্রীষ্মে সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তুরস্কে আশ্রিত কয়েক মিলিয়ন সিরীয় শরণার্থী তখন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করবেন।