সামরিক আইন জারির দায়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত মঙ্গলবার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সামরিক আইন জারির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সিউল পশ্চিম ডিস্ট্রিক্ট আদালত জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন হেডকোয়ার্টার-এর [যৌথ তদন্ত সদর দপ্তর] আবেদনের পর আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার অনুমতি দিয়েছেন। তদন্তকারী দল ইউনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তদন্ত করছে।
যৌথ তদন্ত সদর দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, "আজ সকালে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং তল্লাশি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।"
এই প্রথম দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
তবে, ইউনকে কখন গ্রেপ্তার করা হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা দল কয়েকটি তল্লাশি পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধা দিয়েছে। প্রেসিডেন্টের দপ্তর ও বাসভবনে প্রবেশেও তারা বাধা দেয়।
আদালতের সিদ্ধান্তের পর নিরাপত্তা দপ্তর জানিয়েছে, তারা আইনি প্রক্রিয়া মেনেই কাজ করবে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, নিরাপত্তা দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য ইউনকে তৎক্ষণাৎ গ্রেপ্তার করার সম্ভাবনা কম।
যদি ইউনকে গ্রেপ্তার করা হয়, তদন্ত দল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকে রাখার অনুমতি চাইবে বা মুক্তি দেবে।
ইউনের আইনজীবী ইউন গ্যাপ-গিউন এই পরোয়ানাকে "অবৈধ ও অকার্যকর" বলে দাবি করেছেন। তার মতে, রাষ্ট্রদ্রোহ তদন্তের ক্ষমতা দুর্নীতি তদন্ত অফিসের নেই।
ইউনের দল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা কওন সুং-ডংও আদালতের সিদ্ধান্তকে "অযৌক্তিক" বলে সমালোচনা করেছেন।
গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারির কারণে ইউনের মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন বেশিরভাগ অপরাধে তার বিচার করা যাবে না। তবে বিদ্রোহ বা রাষ্ট্রদ্রোহের ক্ষেত্রে তার কোনো রক্ষা নেই।
১৪ ডিসেম্বর দেশটির জাতীয় সংসদে ইউনের অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ২০৪ জন সংসদ সদস্য, বিপক্ষে ছিলেন ৮৫ জন। তিনজন ভোটদানে বিরত থাকেন এবং আটটি ব্যালট অবৈধ হিসেবে গণ্য হয়। অভিশংসিত হওয়ায় ইউন তার দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার হয়েছেন।
এ অবস্থায় সংসদ শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সুকে অভিশংসিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন দায়িত্ব পেয়েছেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মক।
সংবিধান আদালত আগামী ছয় মাসের মধ্যে অভিশংসনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে। এরপর ইউন হয় পদ হারাবেন, নয়তো দায়িত্বে ফিরবেন।
ইউন তার সামরিক আইন জারির পদক্ষেপকে বৈধ ও প্রয়োজনীয় দাবি করে বলেছেন, "রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি" এবং বিরোধীদের বাধা মোকাবিলা করার জন্য এটি করা হয়েছিল।