মন্ত্রীত্ব হারানোর পর টিউলিপের ওপর এখন এমপি পদ ছাড়তে চাপ বাড়ছে
দুর্নীতির অভিযোগের পর টিউলিপ সিদ্দিকের এমপি পদ ছাড়তে চাপ বাড়ছে। এই মাসে তিনি ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তার পরিবার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় বাংলাদেশ থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড পাচার করেছেন।
তবে, টিউলিপ সিদ্দিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ আসার পরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস (প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা) লরি ম্যাগনাসের কাছে তদন্তের আহ্বান জানিয়ে চিঠি লেখেন তিনি।
ম্যাগনাস জানান, টিউলিপ সিদ্দিক ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
এদিকে, এই সপ্তাহে টোরি দল হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট এলাকায় তার পদত্যাগের দাবিতে প্রচারণা শুরু করেছে, লিফলেট বিতরণ করেছে। আগামীকাল (২৮ জানুয়ারি) একটি পিটিশনের মাধ্যমে তাকে স্থানীয় জনগণের মুখোমুখি হওয়ার দাবি জানানো হবে।
লিফলেটে মেইলের একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড দুর্নীতির সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ক্যামডেনের সিনিয়র টোরি কর্মকর্তা ডেভিড ডগলাস বলেন, "সবাই যেমন ভাবে, সেই সরল মেয়েটি সে নয়।"
টিউলিপ সিদ্দিক গত ১৪ জানুয়ারি ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর ২৬ দিন আগে মেইল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, তিনি বাংলাদেশে বড় ধরনের দুর্নীতির তদন্তের মুখোমুখি।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা শেখ হাসিনার সরকারের সাথে সম্পর্ক থাকার কারণে লেবার পার্টি নেতার পরামর্শে পদত্যাগ করেন।
লরি ম্যাগনাস বলেছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে সুনামের ঝুঁকি নিয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের সচেতন না থাকাটা "দুঃখজনক"।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলোর কর ও অর্থায়ন নিয়ে কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হওয়াটাও "খুবই দুঃখজনক"।
দ্য মেইল অন সানডের কাছে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়া নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পরে টিউলিপ সিদ্দিক সেই তথ্য সংশোধন করেন। লরি ম্যাগনাস এটিকে "দুর্ভাগ্যজনক" বলে উল্লেখ করেন।
তিনি তার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে বলেন, যদিও সিদ্দিক মন্ত্রিত্বের নীতিমালা ভঙ্গ করেননি এবং "অনিয়মের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি", স্যার কিয়ার স্টারমারের উচিত তার দুর্নীতি বিরোধী মন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা।
তীব্র সমালোচনার পরও টিউলিপ সিদ্দিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও রাজনৈতিক মিত্র কিয়ার স্টারমার জানান, তার জন্য "ভবিষ্যতে দরজা খোলা থাকব"'।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি "দুঃখের সঙ্গে" সিটি মন্ত্রীর পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন এবং এটি একটি "কঠিন সিদ্ধান্ত" ছিল।
টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে এই আচরণটি সাবেক পরিবহন মন্ত্রী লুইস হেইগের তুলনায় ভিন্ন। লুইস হেইগের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার অভিযোগ উঠার পর দ্রুত পদত্যাগ করেছিলেন।
তবে, লেবার পার্টি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।