আপৎকালীন তহবিলে তেল বিক্রির আরও ৯৪০ কোটি ডলার যোগ করেছে রাশিয়া
বিশ্ববাজারে চড়া তেল ও গ্যাসের দাম, যার সুবিধা পাচ্ছে রাশিয়াও। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বাড়ছে এ খাত থেকে মস্কোর আয়। সেই সুবাদে জ্বালানি বিক্রি করে পাওয়া ৯৪০ কোটি মার্কিন ডলারের সমান অর্থ জরুরি মজুদ তহবিলে যোগ করেছে রুশ সরকার।
গত বৃহস্পতিবার জরুরি রিজার্ভ আরও সমৃদ্ধ করার খবর জানায় ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। ২০২২ সালের জ্বালানি আয় থেকেই যা এ পরিমাণ বাড়ানো হলো।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মতো সংকটকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আপৎকালীন তহবিল গড়েছে রাশিয়া। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পরও নিষেধাজ্ঞা এসেছিল, তখন মস্কো এ তহবিলের অর্থ ব্যবহার করেছে। একইভাবে, আগামী যেকোনো সংকট মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।
চলতি বছরে রুশ সরকার তেল ও গ্যাস বিক্রি করে যে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল, তার চেয়েও অনেক বেশি রাজস্ব পাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাজেট লক্ষ্যমাত্রা অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই ছাড়িয়ে যাবে। অথচ নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধের মাধ্যমে ইউরোপিয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য রাশিয়ায় অর্থ প্রবাহ বন্ধ করতে চেয়েছিল। এই লক্ষ্যে এরমধ্যেই রাশিয়ার তেল আমদানি কমাতে চলেছে ইইউ। আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য আগেই আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেয়।
সবচেয়ে সাম্প্রতিক প্যাকেজ নিষেধাজ্ঞাটি দিয়েছে ইইউ, এটাই রাশিয়াকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির মধ্যে ফেলবে বলে আশা করছে ব্রাসেলস। এর আওতায় আগামী আট মাসের মধ্যে সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করবে জোটভুক্ত দেশগুলি। এছাড়া, রাশিয়ার তেল রপ্তানি চালানের বিমা যেসব সংস্থা করবে তারা ইইউ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এতে করে, বিশ্বের যেকোনো স্থানেই হোক- ট্যাংকার জাহাজ ও বিমা সংকটে রাশিয়ার রপ্তানি কমবে বলে ইউরোপিয় নেতৃবৃন্দ আশা করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি কার্যকর হওয়ার পর রাশিয়ার তেল রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে কমতে পারে।
আর হয়তো এজন্যই সময় থাকতে আবারো জরুরি তহবিলকে শক্তিশালী করছে মস্কো। আগামী ছয় মাস পরই ইইউ নিষেধাজ্ঞার আঘাত আসা শুরু করবে- এমন অনুমান করা হচ্ছে। এতে জ্বালানির বিশ্ববাজারে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটার আভাস দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে আপাতত জ্বালানি বিক্রির বিপুল পরিমাণ টাকা রাশিয়ায় আসছে।
গত সপ্তাহে দেশটির অর্থ-মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি জুন মাসে তেল ও গ্যাস বিক্রি থেকে আরও ৬৩৭ কোটি ডলার অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জনের আশা করা হচ্ছে।
এদিকে তেল বিক্রির রাজস্ব আসতে থাকলেও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই অঙ্কের মূল্যস্ফীতি, ভোক্তা ক্রয়ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার মতো সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে রুশ অর্থনীতিকে।
মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় গত মাসে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার, ১ জুন থেকে ন্যূনতম মজুরি ও অবসর-ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়।
- সূত্র: অয়েল প্রাইস ডটকম