খামারে বিক্রি ভালো, জমেনি এখনও পশুর হাট
পবিত্র ঈদুল আযহার এক সপ্তাহ বাকি। বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ী ও খামারিরা ট্রাকভর্তি পশু আনছেন হাটগুলোতে। কেউ কেউ পশুর হাটের জন্য অপেক্ষা না করে খামার থেকেই কিনে নিচ্ছেন কোরবানির পশু।
রাজধানীর বিভিন্ন খামার ঘুরে জানা গেছে, তাদের বিক্রি ভালো হচ্ছে। কোন কোন খামারে এরই মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পশু বিক্রি হয়ে গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় কয়েকটি খামারে গিয়ে দেখা যায় ছোট-বড় সাইজের বিভিন্ন দামের গরু সারিবদ্ধভাবে পরিচর্যা করা হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে বেড়িবাঁধ রাস্তা দিয়ে গাবতলীর দিকে একটু এগোতে প্রধান সড়কের কাছেই সাদেক অ্যাগ্রো। এখানে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা ২৫০০টি পশুর মধ্যে ৭০ শতাংশই বিক্রি হয়ে গেছে।
এগ্রোর ইনচার্জ সাহরিয়ার পরশ টিবিএসকে বলেন, '৯০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা দামের ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। ইতিমধ্যে আমাদের ৭০ শতাংশ পশু বুকিং হয়ে গেছে। গ্রাহক সেগুলো ঈদের দুই দিন আগে নিয়ে যাবেন। আমরা তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিব।'
গরু ছাড়াও , ছাগল, মহিষ, উট, দুম্বাও রয়েছে এ ফার্মে। বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের বড় গরু রয়েছে এখানে যেগুলোর দাম ১৮ থেকে ৩৭ লাখ টাকার মধ্যে।
বেড়িবাঁধ এলাকার আরেকটি খামার স্বদেশ এগ্রো। এখানে ৩১টি গরু রয়েছে। সবগুলোই ছোট ও মাঝারি আকারের। এর মধ্যে ৭টি গরু বিক্রি হয়েছে। খামারের মালিক আব্দুল কাইয়ুম টিবিএসকে বলেন, 'আমার এখানে ৯৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার গরু আছে।'
এদিকে পশু আসতে শুরু করেছে রাজধানীর হাটগুলোতে। রাজধানীর অস্থায়ী হাটগুলোতে আগামী ৬ জুলাই থেকে শুরু হবে বিক্রি কার্যক্রম। হাটে ঈদের দিনসহ মোট পাঁচদিন চলবে পশু বেচাকেনা।
এ বছর রাজধানীতে মোট ১৯টি কোরবানির পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। হাটগুলোর মধ্যে ২টি স্থায়ী হাট, যেগুলোতে বছরের অন্য সময়ও পশু বিক্রি হয়। এরমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রয়েছে গাবতলী স্থায়ী হাট এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রয়েছে সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাট। এই হাট দুটি ছাড়া আরও ১৭টি অস্থায়ী হাট বসাচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১০টি ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবে ৭টি হাট।
রাজধানীর মেরাদিয়া গরুর হাটে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা গরু খামারিরা ট্রাক থেকে নামিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখছেন। অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন বিভিন্ন আকারের গরু। কেউ দাম জানতে চাচ্ছেন। হাট ঘুরে দেখা গেছে, এক লাখের নিচে গরু নেই।
এই হাটে খুলনা থেকে ১০টি গরু এনেছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, 'গরু লালনপালনে খরচ বেড়েছে। তাই গতবছরের চেয়ে দাম বেশি হবে এবার।'
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবারও গবাদিপশুর পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। চলতি বছর ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার পশুর মধ্যে গরু ও মহিষের সংখ্যা ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৩৮৩টি। গরু-মহিষের এ সংখ্যার মধ্যে হৃষ্টপুষ্ট গবাদিপশু রয়েছে ৪২ লাখ ৪০ হাজার ৪৯৩টি আর গৃহপালিত গবাদিপশুর সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৯০।