৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরের প্যাকেজিং সেক্টর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের (বিএসএমএসএন) প্যাকেজিং চাহিদা মেটাতে এবং সরাসরি প্যাকেজিং রপ্তানি বাড়াতে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন স্থানীয় প্যাকেজিং অ্যান্ড অ্যাকসেসরিস নির্মাতারা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন মতি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, "শিল্প নগরে আমাদের ১৫০ একর জমি প্রয়োজন। সম্প্রতি আমরা ২৫ একর জমির অনুমোদন পেয়েছি।"
তিনি আরো জানান, অন্তত আরো ১০০ একর জমির জন্য বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি, বেজা-কে অনুরোধ করেছেন তারা।
"এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং শুধু গার্মেন্টস শিল্পেই প্রয়োজন না। সব প্রতিষ্ঠানেরই প্রয়োজন," বলেন তিনি।
দ্রুত কাজ শুরু করতে চান জানিয়ে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, "প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে বেজা থেকে কিছু অনুমোদনের প্রয়োজন আছে। সেগুলো পেয়ে গেলে আমরা ভবন তৈরি শুরু করে দেব। অ্যাসোসিয়েশনে প্রায় ১৯০০ সদস্য রয়েছে। সদস্যরা সেখানে বিনিয়োগে আগ্রহী।"
চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় ৩০ হাজার একর জায়গার ওপর নির্মিত হচ্ছে দেশের বৃহত্তম শিল্পনগরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর। শিল্পনগরীতে ৫০০ একর জমিতে একটি গার্মেন্টস পল্লী হবে।
মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অ্যাসোসিয়েশন গার্মেন্টস পল্লীতে প্যাকেজিং সহায়তা দিতে চায় এবং একইসঙ্গে প্যাকেজিং ও আনুষঙ্গিক রপ্তানি বাড়াতে চায়।
তিনি বলেন, শিল্পনগরীর নতুন প্যাকেজিং কারখানাগুলো পলিব্যাগ, প্লাস্টিকের হ্যাঙ্গার, বিভিন্ন ধরনের সুতো, টুইল টেপ, ড্রস্ট্রিং, প্যাডিং ও কুইল্টিং টেপ এবং চেইন তৈরি করবে।
অ্যাসোসিয়েশনের মতে, বর্তমানে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে প্রায় ১৮০০ প্যাকেজার এবং আনুষঙ্গিক-উৎপাদন ইউনিট রয়েছে। কারখানাগুলো রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে বোতাম, প্লাস্টিকের হ্যাঙ্গার, পলিব্যাগ, লেবেল, জিপার, ট্যাগ, টেপ, থ্রেড, ফিতা, রিভেট, লেইস, হুক, ট্রান্সফার ফিল্ম, কাগজ এবং কালির মতো ৪০ ধরনের পণ্য সরবরাহ করে।
তিনি আরো বলেন, "বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পের আনুষঙ্গিক পণ্যে স্বনির্ভর। শতভাগ সাপোর্ট দিতে সক্ষম আমরা। শুধু তৈরি পোশাক শিল্পই নয়; চামড়া খাত, ফার্মাসিউটিক্যালস, হোম টেক্সটাইল, মৎস্য, ক্রোকারিজ খাতের জন্যেও প্যাকেজিং পণ্য সরবরাহ করি আমরা।"
এই ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সেক্টর স্থানীয় আরএমজি এবং চামড়া খাতের সামগ্রিক প্যাকেজিং চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
মোয়াজ্জেম হোসেনের মতে, প্যাকেজিং শিল্প গত অর্থবছরে পোশাক খাতের মাধ্যমে ৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। যেখানে ১৮টি দেশে বার্ষিক সরাসরি প্যাকেজিং রপ্তানি প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার।
নির্মাতারা বলছেন, বিশ্বব্যাপী প্যাকেজিং বাজার প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার।
তারা সরাসরি রপ্তানি বাড়াতে কাজ করছেন বলে জানান মোয়াজ্জেম হোসেন।