৯০০-র বেশি ‘চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি’ দেওয়ার ইতিহাস আছে চীনের!
ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর কেন্দ্র করে বাড়ছে উত্তেজনা। চীন ইতোমধ্যেই পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়ার আয়োজন দেখে চীন কখন যুদ্ধ ঘোষণা করে বসে সেই চিন্তায় অনেকের রাতের ঘুমও হারাম হয়ে গেছে।
কিন্তু আসলেই কি চীন আক্রমণ করে বসবে? সেটা অবশ্য এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে চীন যে এবারই প্রথম হুমকি-ধামকি দিচ্ছে তা কিন্তু না। এর আগেও চীনারা বহুবার 'ফাইনাল ওয়ার্নিং' বা 'চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি' জারি করেছে। কিন্তু চীন দেশ নাকি যতটা গর্জে ততটা বর্ষে না!
এগুলো অবশ্য পশ্চিমাদের কথা নয়, বরং চীনাদের বর্তমান মিত্র রুশরাই এমনটা বলে থাকে। এমনকি রুশ ভাষায় একটি প্রবাদই আছে যার অর্থ 'চীনের শেষ সতর্কতা'।
বিদ্রুপাত্মক এই প্রবাদের জন্ম অবশ্য সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে। সাধারণত কোনো হুমকি বা সতর্কতা যার কোনো পরিণতি নেই, তা বোঝাতেই এই প্রবাদ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে তাইওয়ান ইস্যুতে মার্কিন-চীন উত্তেজনার সময়ে এই প্রবাদের সূচনা।
চীন তাদের প্রথম শেষ সতর্কতা জারি করে ১৯৫৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। সেসময়ও তাইওয়ান সংকট চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রকে শেষবারের মতো সতর্ক করে চীন। যুক্তরাষ্ট্র তখন চীন নিয়ন্ত্রিত সমুদ্রসীমায় সামরিক বিমান উড়ায়। পরবর্তীতে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে এ ধরনের যত ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই চীন কূটনৈতিকভাবে 'শেষ সতর্কতা' জারি করে।
১৯৬৪ সাল পর্যন্ত চীনের তরফ থেকে এ ধরনের ৯০০টির বেশি 'ফাইনাল ওয়ার্নিং' জারি করা হয়!
সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পরেও প্রবাদটি সোভিয়েত ভেঙে গড়ে ওঠা দেশগুলোতে প্রবাদ হিসেবে রয়ে গেছে। এস্তোনিয়াতে প্রবাদটি এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
এখন অবশ্য রুশ প্রবাদটির সঙ্গে আর রাজনীতির সম্পর্ক নেই। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র বা খোদ চীনকে উদ্দেশ্য করেও এই প্রবাদ আর ব্যবহৃত হয় না। বরং প্রবাদটি স্রেফ নিষ্ফল আস্ফালনই নির্দেশ করে।
তাছাড়া চীনও এখন আর আগের অবস্থানে নেই। তাদের সামরিক সক্ষমতাও বহুগুণে বেড়েছে। আর তাই চীনের এবারকার সতর্কবার্তা নিছক ঠাট্টা হিসেবে নেওয়া বোধহয় ঠিক হবে না। কে বলতে পারে এটা আদতেই হয়তো চীনের শেষ 'ফাইনাল ওয়ার্নিং'!
- সূত্র: এয়ারওয়্যার ডট আরইউ ও ভকরুগসভেতা