এশীয় বাজারের জন্য রেকর্ড মাত্রায় তেলের দাম বাড়াল সৌদি আরব
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম এখন চড়া। ভোক্তাপর্যায়ে মূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি গতি হারাতেও শুরু করেছে। ফলে তেলের চাহিদা কমার কিছু লক্ষণ দেখা গেলেও– বাজার এখনও টান টান অবস্থায়। অর্থাৎ, চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ব্যবধান খুবই কম।
এরমধ্যেই এশীয় ক্রেতাদের জন্য জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড মাত্রায় বাড়িয়েছে সৌদি আরব।
সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত উৎপাদক আরামকো তাদের আরব লাইট গ্রেড ক্রুডের দাম বাড়িয়েছে। আগামী মাসে এশিয়ায় পাঠানো চালানে এই মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হবে, যা আঞ্চলিক বেঞ্চমার্কের চেয়ে ৯.৮০ ডলার বেশি।
চলতি আগস্টের তুলনায় এই দাম বাড়ানো হলো আরও ৫০ সেন্ট। যদিও গত জুলাইয়ে পরিচালিত ব্লুমবার্গের এক জরিপে অংশগ্রহণকারী জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী ও পরিশোধনাগার শিল্প আরও বেশি বা ১.৫০ ডলার দরবৃদ্ধির অনুমান জানিয়েছিল।
সৌদি আরব বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক। রিয়াদের ওপর উৎপাদন বৃদ্ধির চাপ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্যেই গত বুধবার (৩ আগষ্ট) হয়েছে জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক ২৩ দেশের জোট ওপেক প্লাসের বৈঠক। এই জোটের নেতৃত্ব আছে সৌদি ও রাশিয়ার হাতে। বৈঠকে নিজেদের ইতিহাসে অন্যতম কম উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষণা দিয়েছে জোটটি।
ওপেক প্লাস স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে– পশ্চিমা চাপের মুখেও তারা জ্বালানি পণ্যটির সরবরাহ বাড়িয়ে দর কমাতে আগ্রহী নয় মোটেও।
এর একদিন পরই এশিয়ার জন্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালো সৌদি।
ওপেক প্লাসের থেকে সরবরাহ সেভাবে না বাড়লেও– বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেল বা ক্রুডের দাম কমেছে। লাইট ক্রুডের ব্রেন্ট সূচকে অন্তত ৪ শতাংশ দরপতন হলে–ব্যারেলপ্রতি দাম নেমে আসে ১০০ ডলারের নিচে।
যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমে আসা এবং লিবিয়ায় উৎপাদন স্বাভাবিক হতে থাকার তথ্য দরপতনের পেছনে ভূমিকা রাখে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর ব্রেন্ট ক্রুডের দর ব্যারেলপ্রতি প্রায় ১৩০ ডলারে পৌঁছে যায়। এরপর থেকেই তা কমছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায়।
সৌদি আরব নিজেদের উৎপাদিত অধিকাংশ তেল এশিয়াতেই বিক্রি করে। সৌদির আরামকোর মাসিক মূল্য নির্ধারণকে মধ্যপ্রাচ্যের তেল রপ্তানিকারক অন্য দেশগুলিও অনুসরণ করে। এবার তারাও এশীয় ক্রেতাদের জন্য দাম বাড়াবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ