মিরাজ, আফিফের পর মোসাদ্দেক ঝড়, বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ
পরিবর্তনের হাওয়ায় কাটা পড়লেন দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও নাঈম শেখ। তাদের জায়গায় ইনিংস উদ্বোধনের দায়িত্ব পেলেন সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সাব্বির না পারলেও ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে দারুণ শুরুর স্বাদ এনে দিলেন মিরাজ। এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুবর খুনে ব্যাটিংয়ের দায়িত্বশীল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দেখা মিললো।
শেষ দিকে ঝড় তুললেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, অবদান রাখলেন পেসার তাসকিন আহমেদও। তাতে এশিয়া কাপে সুপার ফোরে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশ পেল কড় সংগ্রহ। বৃহস্পতিবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৮৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। যা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ এদিন নতুন দুই ওপেনারের ব্যাটে নতুনভাবে শুরু করে। শুরু থেকেই টি-টোয়েন্টি মেজাজের ব্যাটিংয়ের চেষ্টা দেখা যায় সাব্বির ও মিরাজের মধ্যে। উদ্বোধনী জুটি থেকে বেশি রান না পেলেও এদিন ধুঁকতে দেখা যায়নি বাংলাদেশকে। দলীয় ১৯ রানে তুলে মারতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তিন বছর পর জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ খেলতে নামা সাব্বির। ৬ বলে একটি চারে ৫ রান করেন তিনি।
এরপর অধিনায়ক সাকিব আর হাসানের সঙ্গে জুটি বাধেন মিরাজ। সাকিবকে এক পাশে রেখে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন ডানহাতি এই অলরাউন্ডার। ইনিংস উদ্বোধনে বাংলাদেশের ভাগ্য পাল্টানোর সুযোগ পেয়ে তা ভালোভাবেই কাজে লাগান মিরাজ। দারুণ সব শটে দ্রুত গতিতে দলের রান বাড়িয়ে নিতে থাকেন তিনি। তার মারকুটে ব্যাটিংয়েই পাওয়ার প্লের ৬ ওভার থেকে ৫৫ রান পায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় উইকেটে সাকিবের সঙ্গে ৩৯ রানের জুটি গড়ে থামেন মিরাজ। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ২৬ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩৮ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে লঙ্গান লেগ স্পিনার ভানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে বোল্ড হন মিরাজ। এরপর সাকিবকে বেশি সময় সঙ্গ দিতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ৫ বলে ৪ রান করে লঙ্কান পেসার চামিকা করুনারত্নের লাফিয়ে ওঠা বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
এদিন সাকিবকে রান তুলতে সংগ্রাম করতে দেখা যাচ্ছিল। আফিফ হোসেন ধ্রুবর সঙ্গে ২৩ রানের জুটি গড়ার শুরুতে সেভাবে ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে সময়ের সাথে সাথে মানিয়ে নিয়ে সাবলীল ব্যাটিং শুরু করেন সাকিব, তার ব্যাট থেকে আসতে থাকে বাউন্ডারি। যদিও ইনিংস বড় করা হয়নি তার। ২২ বলে ৩টি চারে ২৪ রান করে আউট হন সাকিব।
সাকিবের বিদায় বুঝতে দেননি আফিফ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। উইকেটে থিতু হতে একটু সময় নিলেও পরে চার-ছক্কায় দ্রুত রান তুলে পুষিয়ে দেন এ দুজন। দারুণ ব্যাটিংয়ে পঞ্চম উইকেটে ৩৭ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন আফিফ-মাহমুদউল্লাহ। এই জুটি গড়ার পথে দুজনই দারুণ কিছু শট খেলেন। খুনে ব্যাটিং করা আফিফ ২২ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে বিদায় নেন।
আফিফের বিদায়ের দুই বল পর থামেন মাহমুদউল্লাহও। হাসারাঙ্গাকে তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন ২২ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২৭ রান করা অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। যদিও দ্রুত দুই উইকেট হারানোর চাপ বুঝতে হয়নি বাংলাদেশকে। উইকেটে গিয়েই ঝড় তোলেন আগের ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা মোসাদ্দেক। কিন্তু শেখ মেহেদির দ্রুত বিদায়ে তাতে ছন্দপতন ঘটে।
তাসকিন আহমেদকে অবশ্য দ্রুতই তা কাটিয়ে ওঠেন। প্রথম বলেই তিন রান নেওয়া বাংলাদেশের পেসার নিজের খেলা পঞ্চম বলে দারুণ এক শটে ছক্কা মারেন। পরের কয়েক বল দারুণভাবে কাজে লাগান মোসাদ্দেক। ৯ বলে ৪টি চারে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাসকিন ৬ বলে করেন ১১ রান। শ্রীলঙ্কার হাসারাঙ্গা ও করুনারত্নে ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন মাদুশাঙ্কা, থিকসানা ও ফার্নান্দো।