নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ভোক্তাদের নাগাদের মধ্যে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ভোজ্যতেল-নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি ২১ হাজার ৫২৮ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২০৩টি দেশে পণ্য রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ৯১টি দেশের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে এবং ১১২টি দেশের সাথে বাণিজ্য ভারসাম্য বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে। এ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ৬০ হাজার ৯৭১ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার আর আমদানি ৮২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১১ হাজার ৯৮৬ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে জানান তিনি।
এদিকে প্রশ্নোত্তরে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, জি টু জি পদ্ধতিতে রাশিয়া থেকে গম এবং ভারত, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম হতে চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশে এখন (৩০ আগস্টের হিসাব) ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। এর মধ্যে ১৭ লাখ ৩৩ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চাল, এক লাখ ৪১ হাজার ১১৮ মেট্রিক টন গম ও এক লাখ ১৭ হাজার ৯৭ মেট্রিক টন ধান, জানান খাদ্যমন্ত্রী।
দেশে খাদ্য সংকটের কোন আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি অনুসারে দেশে ১০ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য নিরাপত্তা মজুত রাখার কথা থাকলেও বর্তমানে এর চেয়ে বেশি মজুত রয়েছে।
"দেশের ১৬.৫২ কোটি মানুষের মোট খাদ্যশস্য গ্রহণের প্রয়োজন ২৩৩ দশমিক ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ২২১ দশমিক ৪১ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ১১ দশমিক ৯৪ লাখ মেট্রিক টন গম। ২০২১-২২ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের উৎপাদন হয়েছে ৩৮৯ দশমিক ২৯ লাখ মেট্রিক টন। যা চাহিদার তুলনায় বেশি।"
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৫ দশমিক ৮ মেট্রিক টন চাল, ১৯ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩৯ দশমিক ৬ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল, ছয় লাখ ৯৯ হাজার ১২৯ দশমিক ৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও ৫৪ হাজার ২৩৭ দশমিক ৬ মেট্রিক টন রসুন আমদানি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬৭ লাখ ২ হাজার ৬৮৮ দশমিক ৫ মেট্রিক টন গম, ২৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪৬৮ দশমিক ৮ মেট্রিক টন তেলবীজ, ২৭ লাখ ৮ হাজার ৪৯ মেট্রিক টন চিনি, তিন লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ দশমিক ৫ মেট্রিক টন মশলা, ১২ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯২ দশমিক ৭ মেট্রিক টন ডাল, ১২ লাখ ৩৬ হাজার ১৩১ দশমিক ৪ মেট্রিক টন ফলমূল, এক লাখ ৫৬ হাজার ২৪৬ দশমিক ২ মেট্রিক টন দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি করা হয়েছে।
এদিকে প্রশ্নোত্তরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছর হতে ২০২০-২১ অর্থবছরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৭৩ লাখ ১৯ হাজার ৩১৬ জন কর্মী বিদেশে পাঠানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গেছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে, ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৭৩৯ জন এবং সবচেয়ে কম গেছে ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই লাখ ৭১ হাজার ৪৪৫ জন।
করোনাকালে ২০২০ সালে চার লাখ ৮ হাজার ৪০৮ জন কর্মী বিদেশ থেকে ফেরত এসেছে। এছাড়া ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৪৯৪ জন কর্মী আউটপাস নিয়ে ফেরত এসেছে বলে জানান মন্ত্রী।