নিউইয়র্কের ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউর আরেক নাম এখন 'লিটল বাংলাদেশ'
নিউইয়র্কের কেনসিংটনের ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউর একটি অংশকে আনুষ্ঠানিকভাবে 'লিটল বাংলাদেশ' নামকরণ করা হয়েছে। নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এই নামকরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদপত্র ব্রুকলিন পেপার জানিয়েছে, গত ১৬ অক্টোবর নতুন নামফলক উন্মোচনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিল সদস্য শাহানা হানিফ, সিটি কম্পট্রলার ব্র্যাড ল্যান্ডার ও অ্যাসেম্বলি সদস্য রবার্ট ক্যারলসহ স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।
নামকরণের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাউন্সিল সদস্য শাহানা হানিফ ইনস্টাগ্রামে লেখেন, "কেন ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউ ও চার্চ এভিনিউ করিডরকে 'লিটল বাংলাদেশ' নামকরণ করা হয়েছে? যাতে আমরা এই এলাকাটিকে আপন মনে করি এবং এই কমিউনিটিকে সুরক্ষার জন্য আমাদের যেসব দায়িত্ব রয়েছে, তা পালন করি।
সিটি কম্পট্রলার ব্র্যাড ল্যান্ডার বলেন, "আজ কেনসিংটনের এই অংশটিকে 'লিটল বাংলাদেশ' নামকরণ করায় প্রত্যেকেই ভীষণ খুশি!" শাহানা হানিফের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, "আমি যা ১২ বছরে করতে পারিনি, তিনি তা মাত্র ১০ মাসেরও কম সময়ে করে দেখিয়েছেন!"
ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউ ও চার্চ এভিনিউ এলাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশির বাস। এ সংখ্যাটা প্রতিবছর বেড়েই চলেছে এবং এখানেই বাংলাদেশি ক্যাফে-রেস্টুরেন্টগুলো অবস্থিত। ২০১৯ সালে এশিয়ান-আমেরিকান ফেডারেশন পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী, শহরের মোট বাংলাদেশির ১৬ শতাংশই ব্রুকলিনে বসবাস করেন। এছাড়া, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে বলে ওই জরিপ থেকে জানা যায়।
বাংলাদেশি অভিবাসী পরিবারের মেয়ে এবং সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত হওয়া প্রথম মুসলিম নারী শাহানার কাছে নামকরণের স্বীকৃতি পাওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গত এপ্রিলে তিনি এই অ্যাভিনিউর অংশকে 'লিটল বাংলাদেশ' নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ক্যারল বলেন, "বহু বছর ধরেই সবাই এই এলাকাকে ব্রুকলিনের বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রাণ বলে জানতো। এবার আনুষ্ঠানিভাবে এই নামকরণ করতে পেরে ভালো লাগছে। আর এর কৃতিত্ব অবশ্যই সিটি কাউন্সিল সদস্যকে (শাহানা) দিতেই হবে... তার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।"
এদিকে নামফলক উন্মোচনের দিন স্থানীয় বাংলাদেশি শিশুরা গান গেয়েছে এবং নিজেদের সংস্কৃতির গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছে বলে জানা যায়।
শাহানা হানিফের ভাষ্যে, নিজ দেশ ছেড়ে অভিবাসী পরিবারগুলো ব্রুকলিনে বসতি স্থাপনের জন্য যে সংগ্রাম করেছেন, তাদের সেই সংগ্রামের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এই নামকরণের মাধ্যমে।