পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস পদত্যাগ করেছেন। খবর বিবিসির।
দায়িত্ব নেয়ার মাত্র দেড় মাসের মাথায়ই সরে দাঁড়ালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ট্রাস বলেছেন, তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত রাজা তৃতীয় চার্লসকে জানিয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরেই ট্রাসের প্রশাসনে ব্যাপক তোলপাড় চলছিল। কনজারভেটির পার্টিরই কয়েকজন এমপি ট্রাসের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে দেওয়া বিবৃতিতে ট্রাস বলেন, তিনি নির্বাচনী ম্যানডেট পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ট্রাসের বদলে কে নেতৃত্বে আসবেন, তা নির্ধারিত হবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ভোটাভুটির মাধ্যমে।
ছয় সপ্তাহ আগে ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই তার সরকারের আর্থিক কর্মসূচি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এ পর্যন্ত তার সরকারের দুজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আর তাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে যয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন তার নিজ দলেরই অন্তত ১৩ জন এমপি।
২০১০ সালে এমপি হিসেবে পার্লামেন্টে আসেন ট্রাস। চার বছর এমপির দায়িত্ব পালন করার পর মন্ত্রিসভায় স্থান পান।
ডেভিড ক্যামেরন ও টেরেসা মে সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন ট্রাস। ২০২১ সালে তিনি পররাষ্ট্র সচিব হন।
বর্তমানে রক্ষণশীল দলের রাজনীতি করলেও ট্রাসের মা-বাবা ছিলেন বামপন্থী। ট্রাস ছিলেন মধ্যপন্থী লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের কিশোরী সদস্য।
মাত্র ১৯ বছর বয়সে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির আহ্বান জানিয়ে আলোচনায় আসেন লিজ ট্রাস।
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী ট্রাস। এজন্য ২০১৬ সালে ইইউয়ে থেকে যাওয়া নিয়ে আয়োজিত গণভোটে বরিস জনসনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময় দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রীর রেকর্ড এখন লিজ ট্রাসের। এর আগে দেশটিতে সবচেয়ে কম সময় প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন ছিলেন জর্জ ক্যানিং। ১৯২৭ সালে ১১৯ দিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রাস সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ার্তেং সংক্ষিপ্ত বাজেট উপস্থাপন করার পরই অস্থিরতার সূত্রপাত। বাজেটে কর কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে যুক্তরাজ্যের বাজারে শুরু হয় অস্থিরতা। ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম কমে যায়। এর জেরে কাওয়াসি কোয়ার্তেংকে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন লিজ ট্রাস। কিন্তু তারপরও ট্রাসের পদত্যাগের দাবি জানাতে থাকেন কনজারভেটিভ পার্টির অনেক নেতা।