অর্থবছরের তিনমাসে কৃষকের ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৬%
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৭ হাজার ৭৬ কোটি টাকার ঋণ শোধ করেছেন কৃষকরা। গত বছরের একই সময়ে পরিশোধ করেছে ৫ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। সে হিসেবে কৃষক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৬.৬৭%। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এছাড়া চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সময়ে কৃষি ও পল্লীঋণ খাতে ৬ হাজার ৫৮৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যা লক্ষ্যমাত্রার ২১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর মোট কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণের এই পরিমাণ গত অর্থবছরের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সময়ের তুলনায় ২.৯৩% বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। কোভিড মহামারি এবং সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কৃষির গুরুত্ব অধিকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই কৃষিখাতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের মাধ্যমে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। এজন্য নতুন অর্থবছরে কৃষিঋণের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আর নতুন অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে ঋণ বিতরণ অনেক ভালো। আগামীতে আরও বাড়বে এ খাতে বিতরণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিনমাসে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ হয়েছিলো ৫ হাজার ২১০ কোটি টাকা। সে হিসেবে চলতি অর্থবছরের তিন মাস আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।
জানা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট লক্ষ্যমাত্রার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৭৫৮ কোটি এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ১৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্য রয়েছে।
এরআগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। সেই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ ঋণ বিতরণ হয়। তবে চলতি অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় ৮.৮৮% বেশি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য নেয়া হয়।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে ২ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ২০%; বেসরকারি ব্যাংকগুলো কৃষি ও পল্লীঋণ খাতে ঋণ বিতরণ করেছে ৪ হাজার ২২৮ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ২২ শতাংশ।
বর্তমানে ব্যাংক খাতে কৃষি ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। যার মধ্যে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ ৩ হাজার ৯৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক শূন্য ৯৩ শতাংশ।
কৃষিঋণের মধ্যে দুই ভাগে অর্থাৎ শস্য ও নন-ফার্ম (যেমন: গবাদিপশু ও মৎস্য খামার) খাতে ঋণ দেয়া হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে শস্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৪৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এছাড়া নন-ফার্মে ১ হাজার ১০০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।