অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু ফ্রান্সের
বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় প্রত্যাশার চাপ তো ছিলই। এর ওপর আবার অস্ট্রেলিয়া শুরুতেই এগিয়ে গেল। যদিও ঘুরে দাঁড়াতে সময় নিলো না ফ্রান্স। এরপর ফরাসীদের আসল রূপ দেখলো অজিরা। আদ্রিয়ান রাবিয়তের সমতাসূচক গোলের পর শাসন করলেন অলিভিয়ের জিরুদ, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা। দাপুটে জয়ে কাতার বিশ্বকাপ শুরু করলে ফ্রান্স।
মঙ্গলবার রাতে 'ডি' গ্রুপের ম্যাচে আল ওয়াকরার আল জানোব স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ফ্রান্স। বিশ্বকাপ শুরুর আগ মুহূর্তে চোটের কারণে করিম বেনজেমাকে হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া ফ্রান্স রীতিমতো শাসন করেই জিতলো। জোড়া গোল করেন জিরুদ। একটি করে গোল করেন রাবিয়ত ও এমবাপ্পে।
ম্যাচের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে গেলেও পুরো ম্যাচে দাপট ছিল ফ্রান্সের। মুহুর্মুহু আক্রমণে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যস্ত করে রাখে ফরাসীরা। ৬৩ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখেন এমবাপ্পে-গ্রিজম্যানরা। গোলমুখে ২৩টি শট নেয় ফ্রান্স, এর মধ্যে ৭টি শট লক্ষ্যে ছিল। ৩৭ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখা ফ্রান্স গোলমুখে ৪টি শট নেয়, মাত্র একটি শট লক্ষ্যে ছিল।
শুরুতেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের নবম মিনিটে হ্যারি সাউটারের লম্বা করে বাড়ানো বল ডান প্রান্ত থেকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ক্রস করেন ম্যাথু লাকি। একে বাড়ে ফাঁকায় থাকা ক্রেইগ গুডউইন ডান পায়ের জোরালো শটে বল জালে জড়ান।
২১তম মিনিটে আরও এগিয়ে যেতে পারতো অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া মিচেল ডিউকের জোরালো শট বারপোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপ পাঁচ মিনিট পর ফরাসী সৌরভের শুরু। ২৭তম মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে ক্রস করেন বদলি খেলোয়াড় থিও হার্নান্দেজ। দারুণ এক হেডে গোল করেন রাবিয়ত।
এগিয়ে যেতেও সময় নেয়নি ফ্রান্স। ৩২তম মিনিটে ডি-বক্সের একটু দূরে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান নাথানিয়েল অ্যাটকিনসন। বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে ফাঁকায় থাকা জিরুদকে বাড়ান খুঁজে নেন রাবিয়ত। আলতো টোকায় বল জালে জড়ান জিরুদ। ফ্রান্সের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এটা তার ৫০তম গোল।
৩৫তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার নেওয়া শট অনেক উপর দিয়ে চলে যায়। ৪০তম মিনিটে উসমান দেম্বেলেও উড়িয়ে মারেন। ৪২তম মিনিটে আঁতোয়ান গ্রিজম্যানের দারুণ শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৪৫তম মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপ্পে। গ্রিজম্যানের দেওয়া হাওয়ায় ভাসা বলে ভলি করেন তিনি। কিন্তু বারপোস্টের উপর দিয়ে যায়।
যোগ করা সময়ে সমতায় ফিরতে পারতো অস্ট্রেলিয়া। বাঁ প্রান্ত থেকে নেওয়া রিলে ম্যাকগ্রির কাটব্যাক থেকে দারুণ এক হেড দেন জ্যাকসন আরভিন। কিন্তু কপাল পোড়া, বল বারপোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। ৫০তম মিনিটে হার্নান্দেজের কাটব্যাক থেকে দারুণ এক বাই-সাইকেল কিক নেন জিরুদ। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬৬তম মিনিটে গ্রিজম্যানের গড়ানো শট গোলরক্ষককে পরাস্থ করতে পারলেও একেবারে গোলমুখ থেকে ফেরান অস্ট্রেলিয়ার এক ডিফেন্ডার। যদিও দুই মিনিট পরই ব্যবধান বাড়ায় ফ্রান্স। ডান প্রান্ত থেকে দেম্বেলের নিখুঁত এক ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন এমবাপ্পে।
৭১তম মিনিটে আরও এগিয়ে যায় ফ্রান্স। বাঁ প্রান্ত থেকে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে এমবাপ্পের নেওয়া কাটব্যাক থেকে দারুণ এক হেডে বল জালে জড়ান জিরুদ। এই গোলে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন ফ্রান্সের সর্বোচ্চ গোলদাতা থিয়েরি অরিঁকে।