এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ১ টাকা বেড়ে এখন ১০১ টাকা
এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ১ টাকা বাড়িয়ে ১০১ টাকা নির্ধারণ করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স (বাফেদা)।
৪ ডিসেম্বর থেকে এক্সপোর্টাররা তাদের ইনকামের বিপরীতে বাড়তি এই দাম পাচ্ছেন।
গত ৩০ নভেম্বর এবিবি ও বাফেদা'র এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ নিয়ে এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম তিন দফা বাড়ানো হলো।
সর্বশেষ ৬ নভেম্বর এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ৯৯.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা করেছিল বাফেদা ও এবিবি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ভাইস-প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ আজিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ব্যাংকগুলো রপ্তানি আয়ের জন্য ১০১ টাকায় ডলার দিতে শুরু করেছে। তবে কাঁচামাল আমদানির বিপরীতে আমরা প্রতি ডলারে ১০৭ থেকে ১০৮ টাকা পরিশোধ করছি। রপ্তানি আয় এবং আমদানি অর্থের মধ্যে ডলারের দামের মধ্যে ২ টাকার পার্থক্য নিয়ন্ত্রণযোগ্য। পার্থক্য বেশি হওয়ায় লোকসান দেখছি আমরা।"
১০৭ টাকার বেশি দামে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে কিছু বেসরকারি ব্যাংক
দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে নির্ধারিত ১০৭ টাকার চেয়ে বেশি দাম দিয়ে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে।
গত ৬ ডিসেম্বর প্ল্যাসিড এক্সপ্রেস নামে একটি এক্সচেঞ্জ হাউজের রেমিট্যান্স বিতরণের একটি নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আমেরিকা থেকে আসা একজন গ্রাহকের রেমিট্যান্সের বিপরীতে দ্বিতীয় প্রজন্মের এবং তৃতীয় প্রজন্মের একটি করে মোট দুইটি ব্যাংক ডলার প্রতি ১০৭.৫০ টাকা রেট অফার করেছে। অথচ ব্যাংকারদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো ব্যাংকই রেমিট্যান্স সংগ্রহে ১০৭ টাকার বেশি দিতে পারবে না।
ওই নথিতেই উল্লেখ থাকা দ্বিতীয় প্রজন্মের একটি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক চলা ব্যাংক ১০৭ টাকা রেট অফার করেছে। ওই তালিকায় থাকা বাকি ১৬টি ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে দিতে চেয়েছিল ১০২.৫০ টাকা রেট।
ফলে ডলারপ্রতি ১০৭.৫০ টাকা রেট দেওয়া ব্যাংক দুটির একটি এই রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে এক্সচেঞ্জ হাউজটি থেকে।
বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, দুটি ব্যাংকসহ অন্তত ৫টি ব্যাংক এবিবি ও বাফেদা নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দামে ডলার সংগ্রহ করছে। ফলে যারা নির্ধারিত রেট দেওয়ার বিষয়টি মেনে চলছে, তাদের রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে।
একটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, "বেশ কিছুদিন ধরে কয়েকটি ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলারের জন্য বেশি পেমেন্ট করছে বলে শুনছি। কিছুক্ষেত্রে আমরা প্রমাণও পেয়েছি। এভাবে চললে তো বাজার ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যাবে।"
গত ১ ডিসেম্বর এক সার্কুলারে এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম এফ হোসেন এবং বাফেদার ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন সাক্ষরিত এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, রেমিট্যান্সের ডলারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা রেট দেওয়া যাবে। এই সিদ্ধান্ত কোনো ব্যাংক না মানলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর ব্যবস্থা নিবে বলে উল্লেখ করা হয়।
অবশ্য কিছু ব্যাংক যে বেশি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কিনছে সেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও স্বীকার করেছে। গত ৪ ডিসেম্বর ব্যাংকার্স মিটিং এ বেশি দাম দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভা শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক জানিয়েছিলেন, "বাফেদা থেকে রেমিট্যান্সের ডলারের ঠিক করে দেওয়া রেট ৯০% এর বেশি ব্যাংক ফলো করছে। অল্প কয়েকটি ব্যাংক কিছু বেশি রেট দিয়েছে।"