নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে বিএনপির ২৫০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় আড়াই হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। পল্টন, মতিঝিল ও শাহজাদপুর থানায় করা তিনটি পৃথক মামলায় পুলিশের উপর আক্রমণ ও বিস্ফোরক আইনে এ মামলাগুলো করা হয়।
মামলায় ৫৫০ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও বাকিদের অজ্ঞাতনামা দেখানো হয়েছে। এ মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন, বিএনপি চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল।
মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করে মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার এনামুল হক মিঠু বলেন, 'গতকালের (বুধবার) সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং আশপাশের এলাকা থেকে দলটির ৪৭৩ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নামোল্লেখসহ আরও দেড় থেকে দুই হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।'
অন্যদিকে গতকালের সংঘর্ষের ঘটনার পর পুরো নয়াপল্টন এলাকা আজ বিকাল পর্যন্ত ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। বিজয়নগরের নাইটিংগেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড়ে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। পরিচয়পত্র দেখানো ছাড়া পুলিশ কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। সকালের দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলে তাকে বিজয়নগর থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
একইসাথে বিএনপির দলীয় কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস পাওয়ার দাবির পর অত্র এলাকায় বোম ডিস্পোজাল ইউনিটের গাড়ি আনা হয়েছে।
তবে বিএনপি কার্যালয়ে বোমা থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে উল্টো পুলিশকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, 'বিএনপির মহাসচিব হয়েও আমাকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে দেয়া হয়নি। এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। আমাদের অফিসে বোমা সম্পর্কে পুলিশ অফিসার যা বলেছেন তা নির্লজ্জ মিথ্যা। তারা (পুলিশ) নিজেরাই বোমাগুলো নিয়ে গিয়েছিল এবং সেখানে রেখেছিল।'
অন্যদিকে আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অনড় বিএনপি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই নয়াপল্টনে রাস্তার মধ্যে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। রাজনৈতিক এ থমথমে পরিস্থিতিতে ঢাকার রাস্তার স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলক কম বাস চলাচল করছে। যার ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। বাস মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সহিংসতা ও ভাঙচুরের আশঙ্কায় তারা বাস চালানো বন্ধ রেখেছেন।