মেসি-এমবাপ্পে ছাড়াও ফাইনালে নজর থাকবে যাদের ওপর
ফাইনালের মূল লড়াইটা হবে লিওনেল মেসি এবং কিলিয়ান এমবাপ্পের মধ্যে। এই দুইজনের যিনি জ্বলে উঠবেন, তার দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথ ততোটাই সহজ হবে। কিন্তু এই দুইজনের বাইরেও ছোট ছোট আরো কিছু লড়াইয়ের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের ভাগ্য।
লিওনেল মেসি এবং কিলিয়ান এমবাপ্পে, দুজন দাঁড়িয়ে আছেন সমান্তরালে। সেরা গোলদাতার তালিকায় যৌথভাবে এক নম্বরে আছেন দুজনে, ৫ গোল করে করেছেন তারা।
এমবাপ্পের পাশাপাশি ফ্রান্সের ফাইনালে ওঠার পেছনে বড় অবদান আছে অলিভিয়ের জিরু, আতোয়ান গ্রিজম্যান, চুয়ামেনিদের। আর্জেন্টিনার ক্ষেত্রে সেটি মেসির পাশে খেলে চার গোল করা হুলিয়ান আলভারেজ, এনসো ফার্নান্দেজ এবং এমিলিয়ানো মার্তিনেজরা।
আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের বিশ্বকাপে ফাইনালে পৌঁছানোর পেছনে মেসি এবং এমবাপ্পের সাথে আরো যারা অবদান রেখেছেন, তাদের পারফরম্যান্স কেমন ছিল তা দেখে নেওয়া যাক-
অলিভিয়ের জিরু (ফ্রান্স)
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করার সাথেসাথে ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন জিরু। কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষ জয়সূচক গোলটিও করেছেন তিনি। গোল্ডেন বুট জেতার লড়াইয়ে বেশ ভালোভাবেই আছেন জিরু।
হুলিয়ান আলভারেজ (আর্জেন্টিনা)
বিশ্বকাপের আগে দলে ডাক পাবেন কিনা সেটিই নিশ্চিত ছিলো না। পেলেও লাউতারো মার্তিনেজের আগে সুযোগ পাবেন না, এটি অনুমেয় ছিলো। সৌদি আরব এবং মেক্সিকোর বিপক্ষে লাউতারোর ব্যর্থতার পর স্কালোনি সুযোগ দেন আলভারেজকে।
সেই সুযোগ কী দারুণভাবেই না কাজে লাগিয়েছেন তিনি! সেমি-ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করেছেন, টুর্নামেন্টে তার মোট গোল ৪ টি।
আতোয়ান গ্রিজম্যান (ফ্রান্স)
২০১৮ বিশ্বকাপেও ফ্রান্সের অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। এবার তো নিজের ভূমিকা বদলে হয়ে গেছেন মিডফিল্ডার। সেখান থেকে পুরো দলের খেলা নিয়ন্ত্রণ করছেন গ্রিজম্যান। এবারও ফ্রান্সের ফাইনালে আসার পেছনে বড় অবদান রেখেছেন তিনি।
এনসো ফার্নান্দেজ (আর্জেন্টিনা)
অনেকটা আলভারেজের মতোই গল্প তার। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে সুযোগ পাননি একাদশে। নেমেছিলেন বদলি হিসেবে। মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচ থেকেই নিজের জাত চেনানো শুরু করেন ফার্নান্দেজ।
ঠান্ডা মাথায় নিয়ন্ত্রণ করেন পুরো মাঠ। মাত্র ২২ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার শুধু আর্জেন্টিনা নয়, কাতার বিশ্বকাপেরই অন্যতম সেরা পারফর্মার।
অউরেলিয়েন চুয়ামেনি (ফ্রান্স)
মাঝমাঠের দুই মূল কাণ্ডারি পল পগবা এবং এনগোলো কান্তে বিশ্বকাপে আসতেই পারেননি চোটের জন্য। কিন্তু সেই অভাব অনেকটাই পূরণ করে দিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। চাপের মুখে বল ধরে রাখতে পারার দুর্দান্ত কৌশল অন্যদের থেকে আলাদা করেছে চুয়ামেনিকে।
কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফ্রান্সের প্রথম গোলটি করেছিলেন তিনি। পুরো টুর্নামেন্টেই চুয়ামেনির পারফর্ম্যান্স ভরসা জুগিয়েছে লে ব্লুজদের।
এমিলিয়ানো মার্তিনেজ (আর্জেন্টিনা)
সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারের পর তুমুল সমালোচনা হয়েছিল আর্জেন্টাইন গোলকিপারের। কিন্তু এরপর থেকেই যেন নিজের জাত চেনাতে শুরু করেন মার্তিনেজ। শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে অসাধারণ সেইভ করে দলকে রক্ষা করেন তিনি।
কোয়ার্টার-ফাইনালে টাইব্রেকারে ডাচদের প্রথম দুই শট ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনার সেমি-ফাইনালের উঠার রাস্তাটাও পরিস্কার করেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।