আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ীদের নাড়ি পোঁতা ফসল উৎপাদন করা গ্রামাঞ্চলেই
লিওনেল মেসির পূর্বপুরুষরা এসেছিলেন লাগুনা লারগা থেকে, তাদের সেরা স্ট্রাইকার এসেছে কালচিন থেকে, অন্যদিকে কোচের জন্মস্থান পুহাতো।
আর্জেন্টিনার পামপাস অঞ্চল, যে অঞ্চল পুরো বিশ্বকে বিভিন্ন ধরনের ফসল আর গরু সরবরাহ করে, সেই অঞ্চলের বিভিন্ন শহর থেকেই উঠে আসা খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে তৈরি হয়েছে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের মেরুদণ্ড। বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় কাতার থেকে তাদের সেই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ফিরে গিয়েছে তাদের জন্মস্থানের লোকজনের সাথে তাদের বিশ্বকাপ জয় উদযাপনের জন্য, স্থানীয়রাও খুশি তাদের জাতীয় বীরদেরকে ছুঁয়ে দেখতে পেরে।
টানা তিন বছরের খরায় বিপর্যস্ত কৃষকদের গম উৎপাদনে ধাক্কা দিয়েছে, সমস্যা সৃষ্টি করেছে সয়াবিন উৎপাদনেও। আর্জেন্টিনার অর্থনীতির জীবন-মরণের অনেকটাই নির্ভর করছে তাদের ফসল রপ্তানির ওপর।
আর্জেন্টিনার বর্তমান স্কোয়াডের এই গ্রামাঞ্চল থেকে আসা তারকারা অবশ্য পূর্বের জাতীয় দল থেকে এদিক থেকে বেশ খানিকটা ভিন্ন, কারণ আগের দলগুলোর খেলোয়াড়দের প্রায় সবাই উঠে এসেছিল রাজধানী বুয়েনোস এইরেসের রাস্তা থেকে অথবা লিওনেল মেসির জন্মস্থান রোজারিও থেকে।
এর কারণ হতে পারে এই শতাব্দীতে আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক ধ্বস, বিশেষ করে আর্জেন্টাইন শহরগুলোকে ভীষণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে এগুলো।
তবে পাম্পাস দীর্ঘদিন ধরেই আর্জেন্টিনার প্রতিভা উৎপাদনের জন্য পরিচিত এক জায়গা। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপজয়ীদের অনেকেই উঠে এসেছিল এই অঞ্চল থেকেই।
আর্জেন্টাইন লেখক এদুয়ার্দো সাচেরি এক সাক্ষাৎকারে জানান, "জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সাধারণত শহর আর গ্রামাঞ্চলের এক মিশ্রণ থাকে, এবং এটা দীর্ঘদিন ধরেই। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অর্থনৈতিক ধ্বসের কারণে শহরাঞ্চলের জীবনমান কমে যাওয়ায় বুয়েনোস এইরেস আর রোজারিওর মতো বড় নগরগুলো থেকে এখন কম খেলোয়াড় উঠে আসছে, যদি পাম্পাসের মতো অঞ্চলের সাথে তুলনা করা হয়।"
পাম্পাসের সাম্প্রতিক উঠে আসা ফসলদের একজন লিসান্দ্রো মার্টিনেজ, যিনি এন্ত্রে রিওস প্রদেশের গুয়ালেগেতে ফেরার পর জন্মস্থানের স্থানীয়দের কাছে নায়কের মতো অভিবাদন পেয়েছেন। "যখনই আমি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে মাঠে নামি, তখনই আমি গুয়ালেগেতে থাকা আমার পরিবার আর আমার মানুষদের মনে করি," গণমাধ্যমকে জানান তিনি।