র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও বলপূর্বক গুম নাটকীয়ভাবে কমে গেছে: এইচআরডব্লিউ
২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও এর কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং বলপূর্বক গুমের ঘটনা নাটকীয়ভাবে কমে গেছে বলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদে বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এ কথা উল্লেখ করে মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, বিচাবহির্ভূত হত্যা ও বলপূর্বক গুম হ্রাস পাওয়ার এই প্রবণতাই ইঙ্গিত দেয় যেয় নিরাপত্তা বাহিনীর অপব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষমতা কর্তৃপক্ষের আছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে ১০০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দাবি করেছে, সংস্কারের পদক্ষেপ না নিয়ে (বাংলাদেশি) কর্তৃপক্ষ মানবাধিকারকর্মী ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানোর পথ বেছে নিয়েছে।
এইচআরডব্লিউ অভিযোগ করেছে, 'মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর অপব্যবহার সাময়িক কমলেও, নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও সমালোচকদের টার্গেট করে পুরনো কার্যকলাপে যাওয়ার লক্ষণ দেখিয়েছে।
সংস্থাটি দাবি করেছে, সরকার তাদের ওপরে নিষেধাজ্ঞার অভিযোগগুলো খারিজ করে দিয়ে বলেছে যে সেগুলো 'মিথ্যা ও বানোয়াট' এবং জানুয়ারিতে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দুজন র্যাব কর্মকর্তাকে 'সাহসিকতা ও দেশের সেবার' জন্য মর্যাদাপূর্ণ পুলিশ পদক প্রদান করে।
প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ আরও বলেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবিকা, চলাচল ও শিক্ষার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি এই মানবিক সংকটের দিক থেকে আন্তর্জাতিক মনোযোগ কমে গেছে এবং রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার প্রচেষ্টা অনেকটাই কমে গেছে।
এইচআরডব্লিউ লিখেছে, বিদেশে অবস্থানরত যেসব ভিন্নতাবলম্বী 'রাষ্ট্রবিরোধী' কর্মকাণ্ড করছে, তাদের তালিকা তৈরি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া কর্তৃপক্ষ এসব প্রবাসী ভিন্নমতাবলম্বীদের আত্মীয়-স্বজন এবং সরকার বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনকে টার্গেট করেছে বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে সমালোচকদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে এবং এ আইন সংস্কারের জন্য জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উপর্যুপরি অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।
শিশু অধিকার আইনজীবীদের উদ্ধৃতি দিয়ে মানবাধিকার সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, কোভিডের কারণে বাংলাদেশে প্রায় ১৮ মাস স্কুল বন্ধ থাকার পর হাজারো শিক্ষার্থী আর স্কুলে ফেরেনি। উল্টো মহামারিকালীন অর্থনৈতিক সংকটের সময় এই শিশুদের অনেককে শিশুশ্রমে ঠেলে দেওয়া হয়।