কোন কোন দেশের কাছে কতগুলো পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে?
বর্তমানে নয়টি দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। সেগুলো হলো: রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, ভারত, ইসরায়েল এবং উত্তর কোরিয়া। এই নয়টি দেশের হাতে মোট ১২,৭০০টি নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড রয়েছে, যার মধ্যে ৯, ৪০০টিই সক্রিয় সামরিক মজুদাগারে রয়েছে। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ৭০,০০০ ওয়্যারহেডের তুলনায় সংখ্যায় প্রচুর কম হলেও আগামী কয়েক দশকে পুনরায় এটি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বর্তমান সময়ের ওয়্যারহেডগুল আরও ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম।
কার হাতে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে?
একটি নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড মুহূর্তের মধ্যেই কয়েক লক্ষ মানুষ মেরে ফেলতে সক্ষম, যা পরিবেশ এবং মানুষের ওপর প্রচণ্ড ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। নিউ ইয়র্ক শহরের ওপর কেবল একটি নিউক্লিয়্যার ওয়্যারহেডের বিস্ফোরণ ঘটলেই প্রায় ছয় লক্ষ লোকের প্রাণহানি ঘটবে।
নয়টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের কাছে ১৩ হাজার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে, যেগুলোর প্রতিটির সক্ষমতা হিরোশিমা-নাগাসাকিতে ফেলা বোমার কয়েকগুণ। এগুলো ছাড়াও আরও ৩২টি দেশ এই পারমাণবিক অস্তের সাথে জড়িত। এরমধ্যে ৫টি দেশের কাছে অন্য দেশের তৈরি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে এবং বাকি ২৯টি দেশ সেগুলো ব্যবহারের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে।
'ট্যাকটিকাল' পারমাণবিক অস্ত্র
ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র হলো এমন অস্ত্র, যেগুলো রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নয়। দ্য ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টসদের অনুমান অনুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়ার ট্যাকটিকাল নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেডের সংখ্যা ১,৯১২টি। অন্যদিকে ইউরোপের পাঁচটি দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০০টি ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এগুলোকে ছোট আকারের অস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এগুলোর পারমাণবিক সক্ষমতা ৩০০ কিলোটন, যা হিরোশিমার বোমার তুলনায় ২০ গুণ শক্তিশালী।
যে যে দেশে মার্কিনদের তৈরি নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড রয়েছে
বর্তমানে ইউরোপের ৫টি দেশে মার্কিনদের তৈরি প্রায় ২০০টি নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড রয়েছে। এরমধ্যে ইতালিতে ৮০টি, তুরস্কে ৫০টি এবং বেলজিয়াম, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে ১৫-২০টি করে নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড আছে।
এই পাঁচটি দেশ ছাড়াও ন্যাটো এবং কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সিএসটিও) চুক্তির অধীনে আরও ২৯টি দেশ পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ ও ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো হলো: আলবেনিয়া, আর্মেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, বেলারুশ, বুলগেরিয়া, কানাডা, ক্রোয়েশিয়া, চেকিয়া, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যাণ্ড, জাপান, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টিনিগ্রো, নর্থ মেসিডোনিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন এবং সুইডেন।
সূত্র: আইসিএএনডব্লিউ