৬০ বছর পর নোকিয়ার লোগো পরিবর্তন; নতুন কৌশলে ব্যবসা বাড়ানোর আভাস
অবশেষে প্রায় ৬০ বছর পর প্রথমবারের মত নিজেদের আইকনিক লোগো পরিবর্তন করেছে নোকিয়া করপোরেশন। গতকাল (সোমবার) লোগো পরিবর্তনের পাশাপাশি নিজেদের কৌশল পরিবর্তন করে ব্যবসায়িক ক্ষেত্র বৃদ্ধির আভাস দিয়েছে টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি জায়ান্ট এ কোম্পানিটি।
পূর্বে নোকিয়ার লোগোয় দুটি হাতের আইকন ছিল এবং পুরোপুরি নীল রঙে নোকিয়া লেখা থাকত। সেই লোগো পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে একগুচ্ছ রং ব্যবহার করা হয়েছে। নোকিয়া লেখার স্টাইলও পরিবর্তিত হয়েছে। হাতের পরিবর্তে লোগোতে বন্ধনের মতো আইকন ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
লোগোতে পাঁচটি আলাদা আকৃতি মিলিয়ে নোকিয়া লেখাটি তৈরি করা হয়েছে। যদিও এ লেখায় কোনো নির্দিষ্ট রং রাখা হয়নি। সম্ভবত সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সেই বিভিন্ন রং ব্যবহার করা হয়েছে।
নোকিয়ার লোগো পরিবর্তনের পর সংবাদসংস্থা রয়টার্সে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নোকিয়ার চিফ এক্সিকিউটিভ পেক্কা লুন্ডমার্ক বলেন, "পূর্বে আমাদের কোম্পানির শুধু স্মার্টফোনের সঙ্গে যোগসূত্র ছিল। তবে বর্তমানে আমরা একটি ব্যবসায়িক প্রযুক্তি কোম্পানি হয়ে উঠেছি।"
বার্সেলোনায় বার্ষিক মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে অংশ নিয়েছে নোকিয়ার প্রতিনিধি দল। কংগ্রেসটি আজ (সোমবার) থেকে শুরু হয়ে আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত চলবে। এ আয়োজনের ঠিক আগেরদিন লোগো পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়ে নোকিয়ার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে বেশ কয়েকটি আভাস দিয়েছেন চিফ এক্সিকিউটিভ লুন্ডমার্ক।
একসময়ের প্রভাবশালী কোম্পানিটি বেশ কয়েক বছর ধরেই পরিবর্তনশীল বিশ্ব প্রযুক্তির সাথে খাপ খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে ২০২০ সালে কোম্পানিটির দায়িত্ব নিয়েছিলেন লুন্ডমার্ক। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি মূলত ধাপে ধাপে কোম্পানিটি ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তারই অংশ হিসেবে প্রথমবারের মত কোম্পানিটির লোগো পরিবর্তন করা হয়েছে।
নোকিয়া যে কৌশল পরিবর্তন করেছে, তাতে মাইক্রোসফট এবং অ্যামাজনের মতো সংস্থাকে টেক্কা দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। রয়টার্সের সাক্ষাৎকারে লুন্ডমার্ক আরও বলেন, "গতবছর আমাদের ২১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যা অর্থের হিসেবে প্রায় ২ বিলিয়ন ইউরো। আমরা শীঘ্রই এই পরিমাণকে ডাবল ডিজিটে নিয়ে যেতে চাই।"
বড় বড় প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিগুলো প্রাইভেট ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের টেলিকম যন্ত্রপাতি তৈরিতে সহযোগী হিসেবে বড় বড় টেলিকম কোম্পানিগুলোর সাথে যুক্ত হচ্ছে। আর এ সুযোগটিই লুফে নিচ্ছে নোকিয়া।
এ বিষয়ে লুন্ডমার্ক বলেন, "মার্কেটে বিভিন্ন রকমের পরিস্থিতি তৈরি হবে। কখনও কখনও অন্য সংস্থাগুলোর সাথে নোকিয়া সহযোগী হয়ে কাজ করবে। আবার কখনও কখনও ঐসব প্রতিষ্ঠান নোকিয়ার গ্রাহক হিসেবে থাকবে। তবে আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে, ক্ষেত্রবিশেষে ঐ সংস্থাগুলো নোকিয়ার প্রতিপক্ষও হয়ে উঠবে।"
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর আমেরিকার টেলিকম যন্ত্রপাতি বিক্রির পরিমাণ কমেছে। অন্যদিকে বিক্রি বেড়েছে ভারতের বাজারে। তাই ভারতের বাজার নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নোকিয়ার এ চিফ এক্সিকিউটিভ। এছাড়াও উত্তর আমেরিকায় বছরের দ্বিতীয় ভাগে বিক্রির পরিমাণ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সূত্র: গালফনিউজ