বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধন চায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান ফোলকার ট্যুর্ক বলেছেন বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) সংশোধন করা উচিৎ।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫২তম অধিবেশনে ফোলকার ট্যুর্ক জানান, "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর আমি এই আইন সংশোধনের আবেদন জানাচ্ছি, যাতে করে মুক্ত চিন্তা ও বাকস্বাধীনতা প্রয়োগের জন্য কাউকে অপরাধীর সাজা পেতে না হয়।"
নিজের বক্তব্যে বাংলাদেশসহ ৪০টি দেশের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
ট্যুর্ক যোগ করে বলেন, "বাংলাদেশে রাজনৈতিক নিপীড়নের সাথে সাথে রাজনৈতিক আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার এবং এই বছরের নির্বাচনকে সামনে রেখে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি ও সাংবাদিকদের ওপর হয়রানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে আমি দুঃখপ্রকাশ করছি।"
ট্যুর্ক এরপর ইউক্রেন যুদ্ধে বেসামরিক লোক হতাহত হওয়া এবং ভয়াবহ মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ হওয়া নিয়ে কথা বলেন।
"আগামী প্রজন্মের ইউক্রেনীয়দের অধিকারও ক্ষুণ্ণ হতে চলেছে, আর এই যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি এবং খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সারাবিশ্বের জনগণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ৭৫ বছর আগে আমরা যে মূলভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে অঙ্গীকার করেছিলাম, সেটি ভঙ্গ করার ফলেই আবারো এই ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়েছে।"
তিনি আফগানিস্তানের নারীদের ওপর শোষণ ও দমন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
"আমরা যখন কথা বলছি তখন আফগানিস্তানের নারীদের নিজেদের জীবনের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং সমাজে অংশগ্রহণ কমে আসছে। নারীদের ওপর এই দমন-পীড়ন আফগানিস্তানের অর্থনীতি ও তাদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি বয়ে আনবে। এ ধরনের স্বৈরতন্ত্র কখনো জবাবদিহিতা এড়িয়ে যেতে পারে না। আমরা হাল ছাড়বো না, আমরা সমস্ত আফগান নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য লড়াই করে যাব।"
বক্তব্যের শেষ অংশে ট্যুর্ক বলেন, "আমরা সব ধরনের সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি, যার সাথে নতুন ধরনের মানবাধিকার চ্যালেঞ্জগুলো যোগ হয়েছে, বিশেষ করে ডিজিটাল ক্ষেত্রে, যার মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং নজরদারি রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য মানবাধিকার সম্পর্কিত সচেতনতার সাথে সাথে নতুন ধরনের চিন্তাভাবনা, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নতুন অঙ্গীকার এবং বিশাল পরিমাণ আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন।"