লক্ষ্মীপুরের সাবেক মেয়র ও জ্যেষ্ঠ আ. লীগ নেতা আবু তাহের আর নেই, প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুর পৌনে ২টার দিকে লক্ষ্মীপুরের নিজ বাসভবন পিংকি প্লাজায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু। তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
আবু তাহের লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক তিন বারের মেয়র ছিলেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের দুই বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৫৩ সালের ৮ নভেম্বর জন্ম এ আওয়ামী লীগ নেতার।
পারিবারিক সূত্র জানায়, আবু তাহের দীর্ঘদিন ধরে দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ছিলেন। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে তিনি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন।
আবু তাহেরের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে আ. লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এছাড়া তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামাল, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, জেলা
আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান, সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম
ভূঁইয়া। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা গভীর শোক প্রকাশ করেন।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু তাহের ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের দু'বারের আহবায়ক, ১৯৭৬ সালে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮০ সালে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৪ সালে একই
ইউনিটের সভাপতি, ১৯৮৭ সালে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে ১৯৯০ সালে সভাপতি এবং ১৯৯৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি মুজিববাদী তাহের হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। তাহেরের মেজো ছেলে এ কে এম সালাহ্ উদ্দিন টিপু সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি। তার বড় ছেলে এইচএম বিপ্লব জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এক শোক বার্তায় জানান, আবু তাহেরের মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
রোববার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ মরহুমের নামাজের জানাজায় অংশগ্রহণ করবেন এবং মরহুমের মরদেহের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন।
তার মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগ তিনদিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এদিন দলীয় সকল কর্মকান্ড স্থগিত থাকবে। সেই সাথে কালো ব্যাজ ধারণ করবে দলীয় নেতারা।
জানা গেছে, মরহুমের নামাজের জানাযা শেষে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকায় তার প্রতিষ্ঠিত মহিউস সুন্নাহ জালালিয়া মাদ্রাসার কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।