বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় ৩ লাখ কোটি ডলার ঋণ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার
চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে রেকর্ড ৩ লাখ কোটি ডলার ঋণ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। করোনাভাইরাস সৃষ্ট ক্ষতি থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং কর্মসংস্থান সুরক্ষার প্যাকেজগুলোর কলেবর বৃদ্ধিতে সরকারি খরচের আওতা বেড়েছে।
একারণেই ঋণ নেবে মার্কিন সরকার, যা কোনো প্রান্তিকে নেওয়া সরকারি ঋণের পুরানো রেকর্ডের চাইতে পাঁচগুণ বেশি। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময় ওই রেকর্ড তৈরি হয়েছিল।
আরেকটু আলোচনার মাধ্যমে ঋণের বিপুলতা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। ২০১৯ সালের চারটি প্রান্তিক মিলিয়ে মার্কিন সরকার মাত্র এক লাখ ২৮ হাজার কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাইরাস সংক্রান্ত সহায়তা প্যাকেজ, স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ এবং সরাসরি নগদ অর্থ ভাতা আকারে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মোট ৩ লাখ কোটি ডলার বাজেটের প্রথম প্রান্তে বরাদ্দ দিয়ে ফেলেছে।
এর ফলে দেশটির সরকারি ঋণ ২৫ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেওয়া বরাদ্দগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মোট অর্থনীতির কমপক্ষে ১৪ শতাংশ। এছাড়াও, বার্ষিক বাণিজ্যিক কর পরিশোধের সর্বশেষ জাতীয় সময়সীমা গত ১৫ এপ্রিল হলেও বিশেষ বিবেচনায় তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন পদক্ষেপ সরকারের নগদ অর্থ সঙ্কটকে আরও তীব্র করে তোলে।
মার্কিন সরকার সাধারণত বন্ড বিক্রির মাধ্যমে উন্মুক্ত বাজার থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। অর্থনীতি শক্তিশালী এবং কম ঝুঁকিমুক্ত হওয়ার কারণে অতীতে এধরনের ঋণে খুব কম সুদ দিতে হয়েছে। অনেক বিনিয়োগকারীই তখন নিরাপদ উৎস হিসাবে মার্কিন বন্ডে বিনিয়োগ করতেন। কিন্তু এখন অর্থনীতি নিয়েই ঝুঁকির আওতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রদত্ত সুদের পরিমাণও বাড়তে পারে।
যা নিঃসন্দেহে দেশটির মোট জাতীয় ঋণের পাহাড়কে নতুন উচ্চতায় নেবে বলে আশঙ্কা করছেন রিপাবলিকান দলীয় আইনপ্রণেতারা।
এর আগে গত মাসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ বা কংগ্রেসের বাজেট অফিস- চলতি বছর মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলারের বাজেট ঘাটতি অনুমান করে। কংগ্রেসের বাজেট অফিসের পূর্বানুমান ছিল, দেশটির মোট জাতীয় উৎপাদন গড় (জিডিপি) এর চাইতে ঋণের পরিমাণ ১০০ শতাংশ বেশি হতে চলেছে। কিন্তু এখন প্রথম প্রান্তেই সেই অংক যে আরও বহুগুণে বাড়বে তা প্রায় নিশ্চিত।