বাজারে চিনির সংকট, বিক্রি হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত দামে
ঈদ পরবর্তী রাজধানীর বাজারগুলোতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় চিনির সংকট তৈরী হয়েছে। যে দোকানে আছে সেখানে দাম রাখা হচ্ছে ইচ্ছেমতো। সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও চিনি বিক্রি হচ্ছে না।
কারওয়ানবাজার, মগবাজার, কল্যাণপুর, মিরপুর এলাকা ঘুরে দোকানদারের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তবে কাঁচাবাজারে অধিকাংশ দোকান বন্ধ, ক্রেতাদেরও আনাগোনা কম।
বিক্রেতারা জানান, আগামী সপ্তাহের প্রথম থেকে রাজধানীতে মানুষ পুরোদমে ফিরতে শুরু করলে বাজার আবার জমে উঠবে।
গত ৬ এপ্রিল সরকার পরিশোধিত প্রতি কেজি খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে ১০৪ টাকা আর পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির দাম ১০৯ টাকা।
তবে বাজারে প্যাকেটজাত ও খোলা চিনি প্রতি কেজি বর্তমানে ১২৫-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, রোজার শেষ দিক দিয়েই তারা চাহিদামতো চিনি পায় নি। সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তার চেয়ে বেশি দামে তাদের পাইকারি কিনতে হয়েছে।
মগবাজারে প্রায় ১০ জন দোকানদার জানান, তাদের চিনি ঈদের আগের দিন শেষ হয়ে গেছে। এখনও কোম্পানি তাদের চিনি সরবরাহ করে নি।
আনোয়ার হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, 'ঈদের পর চিনি পাওয়া যাবে না এটা বুঝতে পারি নি। প্রায় ১০ দোকান ঘুরে মগবাজার থেকে এক কেজি খোলা চিনি কিনেছি ১৩০ টাকা দিয়ে।'
এদিকে কারওয়ান বাজারের পাইকারি যে চিনির দোকান সেগুলো মঙ্গলবার বন্ধ দেয়া ছিল। কারওয়ান বাজারের অধিকাংশ দোকানই বন্ধ ছিল। মূল মার্কেটের বাইরে কিছু মুদি দোকান খুলেছে।
কারওয়ান বাজারে কথা হয় হাজী মিজান এন্টারপ্রাইজের বিক্রয়কর্মী মোহম্মদ মনিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'অনেক ক্রেতা এসে ফিরে যাচ্ছে, চিনি দিতে পারছিনা। ঈদের আগে আমাদের পাইকারি চিনি কিনতেই হয়েছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি। আমরা তখন ১২৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি।'
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য মতে, এক বছরে চিনির দাম ৫৫% বেড়ে ১২০-১২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা ১৮-২০ লাখ টন, সে তুলনায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় মাত্র ৩০ হাজার টন।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে চিনি আমদানি কমেছে প্রায় ২.০৮ লাখ টন। সে তুলনায়, চিনির মাসিক চাহিদা প্রায় দেড় লাখ টন, রমজানে যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়।
ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে
ঈদের দুই দিন আগে হঠাৎ কেজিপ্রতি প্রায় ৪০ টাকা বেড়ে ২৭০-২৭৫ টাকা হয় ব্রয়লার মুরগির দাম। মঙ্গলবার দেখা যায় কেজিতে ২০ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগি। কারওয়ান বাজার ও কল্যাণপুরে দেখা যায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬৫ টাকা।
আর গরুর মাংস এখনও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। ঈদের একদিন আগে, কেজিপ্রতি ৫০ টাকা বেড়ে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, এখনও ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কমেছে সবজির দাম
রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সকল ধরনের সবজির দাম কমেছে কেজিতে ৫-১০ টাকা।
কারওয়ান বাজারে কেজিপ্রতি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকায়।
ঈদের আগের দিন ও ঈদের দিন যে শসা বিক্রি হয়েছিল ১২০ টাকা কেজি, এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। কাঁচামরিচ কেজিতে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। তবে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।