অস্ত্র মামলায় আরাভ খানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড
বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে দুবাইয়ে অবস্থানরত আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে ২০১৫ সালে দায়ের করা অস্ত্র আইনের মামলার ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৯ মে) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও মেট্রো বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৪ এর বিচারক মুর্শিদ আহাম্মদের আদালত এ দণ্ডাদেশ দেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি আরাভ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তাকে আরও তিনমাস জেল খাটতে হবে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আরাভ খান তার শ্বশুর সেকেন্দার আলীকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতে শ্বশুরের মগবাজারের বাসায় যান। গুলিভর্তি রিভলবারসহ শ্বশুরের বাসার সামনে থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা করা হয়।
এ ঘটনায় একইদিনে আরাভের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়।
আসামি রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৫ সালের ১ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
একই বছরের ১০ মে আদালত রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এ মামলায় পরে ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ জামিন পান রবিউল।
এরপর জামিনে গিয়ে পলাতক থাকায় ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ে আরাভ খানের সোনার দোকান, 'আরাভ জুয়েলার্স' উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন, এ খবর গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর সবার মনোযোগের কেন্দ্রে পরিণত হন আরাভ খান।
গত ১৫ মার্চ সাকিব ওই দোকানের উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করেন। আরাভকে একটি ফেসবুক পোস্টে দেখার পর অনেকে তাকে হত্যা মামলার অভিযোগে পলাতক রবিউল ইসলাম হিসেবে চিহ্নিত করেন।
এরপর আরাভের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, রবিউল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আশুটিয়া গ্রামের মতিউর রহমান মোল্লা ও লাকী বেগমের ছেলে।
২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি বাসায় খুন হন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পরদিন তার লাশ বস্তায় ভরে গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মামলাটি তদন্ত করে পরের বছরের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দাখিল করে ডিবি। অভিযোগপত্রে পুলিশ উল্লেখ করে, রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি চক্র ধনী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করত। তাদের লক্ষ্য ছিল অশ্লীল ছবি তুলে ধনী ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজি করা।
২০১৯ সালের এপ্রিলে পুলিশ মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় রবিউলসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
২০২০ সালের ২০ অক্টোবর মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর রবিউল ইসলাম পরিচয় দিয়ে একজন ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। প্রায় নয় মাস কারাভোগের পর ওই যুবক দাবি করেন, তিনি আসল রবিউল ইসলাম নন, তার প্রকৃত নাম আবু ইউসুফ। রবিউল ইসলামের কাছ থেকে মাসিক নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে আসামির পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি।
গত ১৮ মার্চ পলাতক আসামি আরাভ খানকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের কাছে চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ পুলিশ।