নারী দলের নতুন নির্বাচক কমিটি, নিয়োগ দেওয়া হলো স্পিন কোচ
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কদিন আগে নির্বাচকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সাবেক ক্রিকেটার মঞ্জুরুল ইসলামকে। এর কদিনের মধ্যেই নতুন জাতীয় নির্বাচক কমিটি গঠন করেছে বিসিবি। প্রথমবারের মতো নারী দলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্পিন কোচ। পাশাপাশি বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের চূড়ান্ত করা হয়েছে নতুন কোচিং প্যানেল।
নারী দলের নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করবেন সাবেক দুই ক্রিকেটার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন ও সজল আহমেদ চৌধুরী। বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের এসব জানিয়েছেন বিসিবির উইমেন উইংয়ের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
নির্বাচক কমিটি ঘোষণা করে বিসিবির এই পরিচালক বলেন, 'আমরা নির্বাচক প্যানেলে সাজ্জাদ আহমেদ শিপন ভাইকে এনেছি, সজল আহমেদ চৌধুরীও আছেন। আপাতত এই দুইজন। পরে একজন হয়তো যুক্ত হবেন। কারণ আমাদের টুর্নামেন্টের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এক জায়গায় বসে বা একজনের পক্ষে এতগুলো টুর্নামেন্ট কভার করা সম্ভব নয়।'
'তাই আমরা এটি (নির্বাচকের সংখ্যা বাড়ানো) করতে যাচ্ছি। বয়সভিত্তিক, ইমার্জিং দল ও জাতীয় দল- সবগুলো খেলায় যেন আমাদের নির্বাচকরা মাঠে থাকতে পারেন, তারা সেটা দেখতে পারেন।' যোগ করেন উইমেন উইংয়ের চেয়ারম্যান।
নারী দলের নতুন স্পিন কোচের নামও জানান শফিউল আলম। নাহিদা আক্তার, ফাহিমা খাতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটার দিনুকা হেতিয়ারাচ্চিকে। শফিউল আলম বলেন, 'আমাদের জাতীয় দলে (প্রধান কোচ) হাশান তিলকারাত্নে আছেন, সম্প্রতি আমরা শ্রীলঙ্কা থেকে স্পিন কোচ হিসেবে দিনুকাকে (দিনুকা হেতিয়ারাচ্চি) নিচ্ছি। তিনি ২-৪ দিনের মধ্যে যুক্ত হবেন।'
নারী দলের স্পিন কোচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার সামান্যই। ৪৬ বছর বয়সী দিনুকা শ্রীলঙ্কার হয়ে একটি ম্যাচ খেলেছেন। ২০০১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় বাঁহাতি এই স্পিনারের, এটাই তার একমাত্র আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দিনকুার ঝলমলে ক্যারিয়ার। ২৩৪ ম্যাচে তার শিকার ১ হাজার উইকেট। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে ১৩৬ ম্যাচে দিনুকা নিয়েছেন ২০৮ উইকেট।
নতুন নির্বাচক কমিটি, স্পিন কোচ ছাড়াও বয়সভিত্তিক পর্যায়ের জন্য নতুন কোচিং প্যানেল সাজাচ্ছে বিসিবি। শফিউল আলম বলেন, 'বয়সভিত্তিকের জন্য আমরা দীপু রায় চৌধুরী ও ওয়াহিদুল গনিকে নিয়েছি। দীপু রায় আগেও কাজ করেছেন৷ আরও ৩-৪ জন কোচকে এই প্যানেলে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে। যেন তারা বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের দলগুলোকে ভবিষ্যতে একটা শক্তিশালী পাইপলাইন হিসেবে তৈরি করে দিতে পারেন।'
নারী ক্রিকেটে পরিবর্তনের ব্যাখ্যা জানাতে গিয়ে বিসিবির এই পরিচালক বলেন, 'বিগত কিছু দিনে আমরা প্রচুর টুর্নামেন্ট শুরু করেছি। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, বিভাগীয় পর্যায়ে টুর্নামেন্ট... আমরা স্কুল ক্রিকেট শুরু করতে যাচ্ছি। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর আমাদের আক্ষেপ ছিল, আমরা লঙ্গার ভার্সনে যাচ্ছি না। এবার সেটা কেটেছে। চারটি (আসলে তিনটি) দল নিয়ে আমরা দুই দিনের ম্যাচের টুর্নামেন্ট (বিসিএল) শুরু করেছি। খুলনায় যেটা হলো। আগামী বছর বা পরবর্তীতে যেটা করব, সেখানে হয়তো দল বাড়তে পারে এবং টুর্নামেন্টের ব্যাপ্তিও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে।'
নারী ক্রিকেটের প্রসার ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিয়ে শফিউল আলম বলেন, 'এখন নারী ক্রিকেট আর আগের মতো দুই-একটা টুর্নামেন্ট বা দুই-একটা সফরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের কার্যক্রম এখন কোনো অংশে কম নয়। আমাদের বিভিন্ন সময় (বিসিবির) গেম ডেভেলপমেন্ট থেকে লোকবল কর্জ নিতে হয়, অন্য জায়গা থেকে লোক এনে জোড়াতালি দিয়ে টুর্নামেন্টগুলো করতে হয়। প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন সাহেবও বলেছেন, নারী বিভাগে যেন পূর্ণাঙ্গ কাঠামো হয় এবং লোকবল বাড়িয়ে নিজস্ব লোক দিয়ে তার যে প্রোগ্রামগুলো আছে, সেগুলো যেন এগিয়ে নিতে পারে৷ সে কারণেই আমরা কিছু অদলবদল করেছি।'