প্রতি বস্তা সিমেন্টে দাম বাড়বে ১৫ টাকা: বিসিএমএ ভাইস প্রেসিডেন্ট
প্রস্তাবিত বাজেটে সিমেন্ট তৈরীর প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকারের আমদানি শুল্ক ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। এটি কার্যকর হলে বাজারে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের দাম ১৫ টাকা বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সিমেন্ট খাতের উদ্যোক্তারা।
তারা বলছেন, এমনিতেই ডলার সংকটের কারণে সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানি কমে গেছে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেকের বেশি। এমন সংকটকালীন সময়ে কাঁচামালে বাড়তি শুল্ক আরোপ এই সেক্টরকে আরো সংকটে ফেলে দেবে।
বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারারস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মেট্রোসেম সিমেন্ট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. শহীদুল্লাহ টিবিএসকে বলেন, "ডলার সংকটের কারণে এমনিতেই চাহিদার ৪০ শতাংশের বেশি সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানি করতে পারছি না। এমন সংকটের মধ্যে সরকার টন প্রতি সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানিতে ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর প্রভাবে ৫০ কেজি সিমেন্টে উৎপাদন খরচ ১৫ টাকা বেড়ে যাবে।"
তিনি বলেন, "সিমেন্ট শিল্পের সংকট কাটাতে আমরা সরকারের কাছে আমদানি শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা পুরণ হয়নি, উল্টো আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। এতে সিমেন্ট খাতের ব্যবসায়ীরা আশাহত হয়েছি।"
"আশা করছি সরকার আমাদের প্রস্তাবনকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে। আমাদের প্রত্যাশা সিমেন্ট শিল্পকে যেন সংকটে না ফেলা হয়। আমদানি শুল্ক কমানো সম্ভব না হলেও যাতে আগের জায়গায় অর্থাৎ ৫০০ টাকা রাখা হয়।"
তিনি আরো বলেন, "ডলার সংকটের কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামাল আমদানি করতে পারছি না। এতে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের গতি ধীরগতির হয়ে গেছে। সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানি কমে যাওয়ায় দেশের মেগা প্রকল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।"
মো. শহীদুল্লাহ বলেন, এআইটি বিষয়ে তাদের জোরালো দাবি ছিলো ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫ শতাংশ করা। কিন্তু বাজেট প্রস্তাবনায় এর প্রতিফলন দেখা যায়নি।
বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৪ টি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি রয়েছে। মাল্টিন্যাশনাল সিমেন্ট ফ্যাক্টরি চারটি। বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি বস্তা সিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকায়।
গত ফ্রেব্রুয়ারিতে এনবিআরের সাথে এক প্রাক বাজেট আলোচনায় সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানিতে টন প্রতি আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলো বিসিএমএ।
সিমেন্ট উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার, স্ল্যাগ, লাইমস্টোন, ফ্লাই অ্যাশ ও জিপসাম আমদানিতে বর্তমানে যে ৩ থেকে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিতে হয়, সেটি কমিয়ে দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রেখেছিলো সংগঠনটি।
এছাড়া বিসিএমএ লাইমস্টোন আমদানিতে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
কিন্তু বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে পেশকৃত বাজেটে রাজস্ব বৃদ্ধির স্বার্থে সিমেন্ট ক্লিংকারের বিদ্যমান শুল্ক প্রতি মেট্রিকটন ৫০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এছাড়া বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য উক্ত শুল্ক প্রতি মে.টন ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।