ইরানের সহায়তায় ড্রোন কারখানা নির্মাণ করছে রাশিয়া, দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
ইরানের সহায়তায় ড্রোন তৈরির কারখানা নির্মাণ করছে রাশিয়া, যা আগামী বছরের শুরুর দিকে সম্পূর্ণরূপে চালু হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মকর্তা জন কিরবি।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, রাশিয়ায় ড্রোন কারখানা নির্মাণে কাস্পিয়ান সাগর হয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের পাশাপাশি সম্পূর্ণরূপে তৈরি ড্রোনও পাঠাচ্ছে ইরান। এছাড়া, গত গ্রীষ্ম থেকে রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে শত শত ড্রোন কিনে সেগুলো ইউক্রেনের যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে বলেও বিশ্বাস করেন তারা।
সিনএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিরবি আগেও জানিয়েছেন, রাশিয়াকে ড্রোন, বুলেট এবং মর্টার শেল দেওয়ার জন্য কাস্পিয়ান সাগর রুট ব্যবহার করছে ইরান। যে জাহাজগুলোতে করে এসব সরঞ্জাম সরবরাহের কাজ করা হচ্ছে, সেগুলোর ট্র্যাকিং ডেটা বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি; যাতে জাহাজগুলো সহজে শনাক্ত করা না যায়।
শুক্রবার (৯ জুন) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান থেকে রাশিয়ায় এসব সরঞ্জাম সরানোর রুটের একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে। দাবি করা হয়েছে, ইরানের আমিরাবাদ থেকে রাশিয়ার মাখাচকালা পর্যন্ত সরঞ্জামগুলো পাঠানোর জন্য এই রুটই ব্যবহার করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাস, মস্কো থেকে প্রায় ৬০০ মাইল পূর্বে রাশিয়ার আলাবুগা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিতরে নিজস্ব ড্রোন কারখানা নির্মাণ করছে রাশিয়া। আর এই কারখানা নির্মাণে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ইরান থেকেই নিচ্ছে দেশটি।
এমনকি, গত ৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সেই কথিত ড্রোন উৎপাদন কারখানার লোকেশন বা অবস্থানের একটি স্যাটেলাইট চিত্রও প্রকাশ করে।
কিরবি বলেন, "উভয় দেশই উভয়কে সাহায্য করছে: ইরানকে রাশিয়া এবং রাশিয়াকে ইরান।"
তিনি আরও বলেন, "রাশিয়া ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এবং বিমান প্রতিরক্ষাসহ অভূতপূর্ব প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়ে আসছে। বছরের শুরুতে ইরান ঘোষণা দিয়েছিল, তারা রাশিয়ার কাছ থেকে এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। এছাড়া, ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে হেলিকপ্টার, রাডার এবং ওয়াইএকে-১৩০ যুদ্ধ প্রশিক্ষণ বিমানসহ অতিরিক্ত সামরিক সরঞ্জাম কিনতে চাইছে। সব মিলিয়ে ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম চাইছে।"
কিরবি বলেন, দেশ দুটির 'ফুল-স্কেল ডিফেন্স পার্টনারশিপ" বা পূর্ণরূপে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বকে 'উন্মোচন এবং ব্যাহত করতেই' এসব তথ্য জনগণের সামনে প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়া-ইরানের এমন প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কের জেরে ইতোমধ্যেই ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে তারা। ইরান যেন ড্রোন তৈরির সরঞ্জাম আমদানি করতে না পারে সে উদ্দেশ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা। তবে প্রতিবেদনে দেখা গছে, বহির্বিশ্ব থেকে অত্যাধুনিক সামগ্রী পাচ্ছে ইরান, এমনকি মার্কিন কোম্পানি নির্মিত সামগ্রীও পাচ্ছে দেশটি। এমনটিই দাবি করা হয়েছে সিএনএন'র প্রতিবেদনে।
এদিকে জন কিরবি বলেছেন, ইরান এবং রাশিয়া ছাড়াও এসব সরঞ্জাম ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দেশের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।