ফরিদপুরে অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় নিহত ৮, তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় হাইওয়েতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সে লাগা আগুনে দগ্ধ চালক মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার (২৪ জুন) বিকেল ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত চালকের নাম মৃদুল মালো (২৫)। তিনি ফরিদপুর শহরের গুহলক্ষ্মীপুর এলাকার তকি মোল্যা সড়কের সুভাষ চন্দ্র মালোর ছেলে।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুল আলম। এর আগে এই দুর্ঘটনাস্থলেই অ্যাম্বুলেন্সের ৭ যাত্রী নিহত হয়।
আজ শনিবার (২৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়নের মালিগ্রাম ফ্লাইওভার এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ওই অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরে যায়।
আগুনে নিহত যাত্রীরা হলেন- ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৫৫), তার মেয়ে কমলা পারভিন (২৬), বিউটি বেগম (২৪), নাতি হাসিব (৮) হাফসা (২), আরিফ (১২) ওমেহেদি (১২)। এর মধ্যে কমলা বেগম ঢাকায় বসবাস করেন। ছোট মেয়ে বিউটি বেগম উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমরা গ্রামের মাহমুদ ইসলাম রনির স্ত্রী।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, সৌদি প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এক মাস আগে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা শেষে বড় মেয়ে কমলা বেগমের বাসায় ছিলেন। আজ শনিবার সকালে তারা ঢাকা থেকে বোয়ালমারী গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় সাতজনই প্রাণ হারান।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়া হয়। শোকের মাতম চলছে সেখানে। খুবই মর্মান্তিক হৃদয় বিদারক ঘটনা, যা দেখলে সহ্য করা যায় না।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বিপুল চন্দ্রকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এছাড়া নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে এবং আহতকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
মাদারীপুর হাইওয়ে রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, মালিগ্রাম ফ্লাইওভার এলাকায় এসে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় অ্যাম্বুলেন্সের সামনের অংশটি ফ্লাইওভারের রেলিং এ গিয়ে আঘাত লাগে। এর ফলে অ্যাম্বুলেন্সে বিস্ফোরণ থেকে আগুন ধরে যায়। অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে ড্রাইভারসহ ৭ যাত্রী ছিলেন। যাত্রীদের সকলেই মারা গেছেন। লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।