কারচুপির অভিযোগ এনে ইসিতে পুনরায় নির্বাচনের আবেদন হিরো আলমের
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া জনপ্রিয় ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম আজ নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার (২৩ জুলাই) ইসিতে লিখিত আবেদন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "উপনির্বাচনে কারচুপি হয়েছে।"
ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মোহাম্মদ এ আরাফাতের কাছে হেরে যাওয়া হিরো আলম ১৭ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে বনানীর বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় হামলার শিকার হন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, হিরো আলম যখন ভক্তদের সাথে ছবি তুলছিলেন তখন একদল লোক তার কাছে এসে বলে, এটি টিকটক কনটেন্ট তৈরির সময় বা জায়গা নয়।
তিনি পাল্টা জবাব দিলে তারা তাকে ধাওয়া করে এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে হিরো আলম গাড়িতে করে সরে যেতে সক্ষম হন।
এ ঘটনায় সেদিনই চারজনকে আটক করা হয়; অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
হিরো আলমের পক্ষে বগুড়ার স্থানীয় সুজন রহমান শুভ (২৫) বাদী হয়ে মারধরের অভিযোগে মামলাটি করেন। সুজনের অভিযোগ, হত্যাচেষ্টায় একদল লোক তার ওপর হামলা চালায়।
বুধবার (১৯ জুলাই) হাসপাতাল থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হিরো আলম বলেন, "আমার জীবন বিপন্ন। আমি আমার জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। এমনকি, একদল লোক আমার বাড়িতে পর্যন্ত গিয়ে আমাকে খুঁজেছে। তারা দারোয়ানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে।"
তিনি আরও বলেন, "৮ থেকে ১০ জন লোক আমার বাড়িতে গিয়ে আমার নাম ধরে চিৎকার করে আমাকে বেরিয়ে আসতে বলেছে।"
তার নিরাপত্তাহীনতার জন্য তিনি পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করেন।
আলম বলেন, "হামলার দিন পুলিশ আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেলে আমি হামলা থেকে রক্ষা পেতাম।"
এদিকে, হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।
গত ১৮ জুলাই এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ডের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা বলেন, "আমরা ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলমের- যিনি হিরো আলম নামে পরিচিত- ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার দাবি জানাই।"
বিবৃতিতে বলা হয়, "গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই।"
আসন্ন নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে সেখানে।
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় সংগঠনগুলোর নিন্দার পাশাপাশি জাতিসংঘও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে।