৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ মধ্যরাতে, ইলিশ ধরতে সাগরে ছুটছেন জেলেরা
বঙ্গোপসাগরে টানা ৬৫ দিনের মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ রোববার রাত ১২টায়। তবে নির্ধারিত সময়সীমার আগেই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূল দিয়ে ইলিশ ধরতে সাগরে নামতে শুরু করেছেন জেলেরা।
গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকার ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মাছ ধরায় এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
চট্টগ্রামের ফিসারীঘাট, ইছাখালী ঘাট, আনোয়ারা, বাঁশখালী, কক্সবাজারের টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া উপকূল থেকে একে একে ছেড়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ট্রলারগুলো।
জেলেরা জানান, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগরে মাছ ধরার ট্রলার আছে প্রায় ১০ হাজার। ইলিশ ধরতে ট্রলার নিয়ে যেতে হবে বঙ্গোপসাগরের ৪০-৬০ কিলোমিটার গভীরে। তাই আগেভাগেই সাগরে রওনা দিচ্ছেন তারা। তাদের আশা, সাগরে গিয়ে জাল ফেললেই ইলিশ ধরা পড়বে। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে এসব ইলিশ পৌঁছে যাবে দেশের হাটবাজারে।
রোববার সকালে চট্টগ্রামের ফিসারিঘাট ও চাক্তাই খালের মোহনায় গিয়ে দেখা যায়, সাগরে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে অর্ধশতাধিক ট্রলার। জেলেরা ট্রলারে বরফ, জ্বালানি তেল ও খাবার মজুত করছেন। কেউ কেউ মাছ ধরার জাল গুছিয়ে নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে কিছু কিছু ট্রলার নদী থেকে সাগরের দিকে রওনা দিয়েছে। সকাল থেকে চট্টগ্রামে আকাশে মেঘের আনাগোনা, সাগরও উত্তাল। বৈরী পরিবেশে সাগরে বড় ইলিশ ধরা পড়ে বলে জানান জেলেরা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, 'নিষেধাজ্ঞার কারণে ইলিশের আকার ও ওজন বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।'
সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় বেকার হয়ে পড়েছিলেন জেলেরা। এ সময় সরকারি ত্রাণসহায়তা দেওয়ার কথা থাকলেও অনেকেই সেটা পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে যাচ্ছে। এখন ইলিশ শিকার করে গত দুই মাসের ক্ষতিপূরণের আশা করছেন জেলেরা।
ফিসারীঘাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আমিনুল হক টিবিএসকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে উপকূলে ইলিশের দেখা পাননি জেলেরা। এবার বড় ইলিশ ধরার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফিশারিঘাটে এমভি সাগর যাত্রা নামের একটি ট্রলারে ১২ জন মাঝিকে সাগরে নামার প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। ওই ট্রলারে জেলে মানিক মিয়া বলেন, নিষেধাজ্ঞায় বেকার সময় কাটিয়েছি। দাদনের টাকায় সংসার চালাতে হচ্ছে। এবার ইলিশ ধরে সেই টাকা পরিশোধ করতে হবে।
মৎস্য ব্যবসায়ী বাবুল সরকার বলেন, আগামী চার-পাঁচ দিনের মাথায় অন্তত হাজার খানেক ট্রলার ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরবে। প্রতিটি ট্রলারে ইলিশ থাকবে ৫০০ থেকে ৩ হাজার ইলিশ। কোরাল, লাক্ষ্যা, চাপা, মাইট্যা, গুইজ্জাসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছও ধরা পড়বে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ইলিশসহ বিপুল সামুদ্রিক মাছ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হবে।