তাপপ্রবাহের মধ্যেও বাড়বে না বিক্রি, বলছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ আইসক্রিম কোম্পানি
বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইসক্রিম কোম্পানি ইউনিলিভার বলেছে, ইউরোপজুড়ে প্রচণ্ড গরম এবং তীব্র তাপপ্রবাহ থাকার পরেও তা আইসক্রিমের বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করবে না; বরং ভোক্তারা এই শীতল ডেজার্টটিকে আপাতত দূরেই রাখতে চাইবেন। মঙ্গলবার ম্যাগনাম ও কোর্নেতোর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি গণমাধ্যমকে একথা জানায়।
ইউনিলিভারের চীফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার গ্রেম পিকেথলি সাংবাদিকদের বলেন, "এ ধরনের তাপমাত্রার ফলে একটি সুইট স্পট তৈরি হয়। যখন অনেক বেশি গরম পড়ে তখন মানুষ আইসক্রিমের বদলে কোল্ড ড্রিংকস বা কোমল পানীয় কেনে বেশি।"
ইউনিলিভারের মালিকানায় আরও রয়েছে আইসক্রিম প্রস্তুতকারক বেন অ্যান্ড জেরি'স। ইউনিলিভার জানায়, চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ঠান্ডা আবহাওয়ার পর জুনে মোটামুটি গরম অনুভূত হয়েছে ইউরোপজুড়ে এবং এই সময়ে ইউরোপে তাদের আউট-অব-হোম সেলস (রেস্টুরেন্ট ও ক্যাটারিং কোম্পানিগুলোতে সরবরাহসহ) বেড়ে গিয়েছিল।
কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, এমনকি স্পেনের কিছু অঞ্চলে স্থানীয় সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবারের তাপমাত্রা এবং গ্রিসে দাবানল সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সাউদার্ন ইউরোপে ভ্রমণকারী পর্যটক এবং এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রচুর পানি করার এবং ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
ইউনিলিভারের বিক্রি করা আইসক্রিমের মধ্যে রয়েছে কার্তে দ'অর এবং ব্রেয়ারস টাব আইসক্রিম। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এবছরের প্রথম ছয় মাসে মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের চাপের মধ্যে থাকা এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দেওয়ায় ইন-হোম আইসক্রিম ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রি ছিল ধীরগতির। ইউরোমনিটর সূত্র অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী আইসক্রিম বিক্রির এক-পঞ্চমাংশই এই ভোগ্যপণ্য জায়ান্টটি নিয়ন্ত্রণ করে।
তবে সার্বিকভাবে আর্থিক মূল্যের হিসাবে, গতবছরের প্রথমার্ধের তুলনায় এবছরের প্রথমার্ধে ইউনিলিভারের আইসক্রিম বিক্রি বেড়েছে ৫.৭ শতাংশ। ভলিউম হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে পণ্য বিক্রির ওপর।
ডাভ সাবান ও ডোমেস্টোস ব্লিচ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভারের ভাষ্যে, যেহেতু তাদের ইনপুট খরচের মধ্যে মূল্যস্ফীতির প্রভাব কমে এসেছে, তাই বছরের বাকি সময়ে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি 'সহনীয়' পর্যায়ে থাকবে।
তবে বিশ্লেষকদের কাছে ইউনিলিভারের সিইও হাইন শুমাখার বলেছেন, কৃষি পণ্যের বাজারে অস্থিরতা- ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে গমের মূল্যবৃদ্ধি এবং সাউদার্ন ইউরোপে খরার প্রভাব ইত্যাদির ফলে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
গত ১ জুলাই ডাচ ডেইরি কোম্পানি রয়্যাল ফ্রিসল্যান্ডকাম্পিনা ছেড়ে ইউনিলিভারের সিইও পদে যোগ দিয়েছেন শুমাখার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'ইউনিলিভারের যোগ্যতা উপলব্ধি করা এবং তাদের পারফরম্যান্স উন্নত করার' সুযোগ ছিল। আসছে অক্টোবরে কোম্পানিটি তৃতীয়-ত্রৈমাসিক আয়ের রিপোর্ট করার পর তিনি নিজের মতো এই ব্যবসার জন্য পরিকল্পনা করবেন।