'স্কুলে যেতে হবে না, কাজ খোঁজো', ১০ বছর বয়সী এ আর রহমানকে বলেছিলেন তাঁর মা
মাত্র নয় বছর বয়সেই বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে অনেক সংগ্রাম করেই পথ চলতে হয়েছে আজকের বিশ্বনন্দিত সঙ্গীতশিল্পী এ আর রহমানকে। কিশোর বয়সে সংসারের হাল ধরার জন্য এ আর রহমানের মা তাকে বলেছিলেন, স্কুল বাদ দিয়ে কাজে যোগ দিতে। সম্প্রতি অস্কারজয়ী এই সঙ্গীতশিল্পীর প্রয়াত মা কারিমা বেগমের একটি পুরনো সাক্ষাৎকার আবার প্রকাশ্যে আসায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এ আর রহমানের বাবা আরকে শেখর ছিলেন একজন সুরকার। রহমানের বয়স যখন ৯ বছর, তখন তিনি এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেন। সন্তানদের নিয়ে অকূল সাগরে পড়েন রহমানের মা কারিমা বেগম। সেসময় রহমান স্কুলে পড়তেন, আবার একইসঙ্গে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবেও কাজ করতেন। কিন্তু এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে তার পক্ষে শুধু একদিকেই মনোনিবেশ করা সম্ভব।
ওটু ইন্ডিয়াকে কারিমা বেগম বলেছিলেন, "সে সবসময় আমার সাথে তর্ক করতো যে, হয় পড়ালেখা করবে নাহয় সেশন মিউজিশিয়ান হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু আমাদের তখন টিকে থাকার জন্য উপার্জন করা দরকার ছিল। তাই আমি তাকে বলি, স্কুলে যাওয়া বাদ দিয়ে গানের দিকেই মন দিতে।"
উল্লেখ্য, সেশন মিউজিশিয়ান হলেন এমন একজন শিল্পী যিনি প্রধান শিল্পীর গানের সুরে ব্যাকআপ দিয়ে থাকেন।
এ আর রহমানের বোন এআর রেহানা জানান, তার ভাই পড়ালেখায় খুব ভালো না হলেও সে স্কুল ছাড়তে চায়নি। "কিন্তু আমার মার জোর করেছিলেন সে যেন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবেই কাজ করে। কারণ বাবা মারা যাওয়ার পর সংসার চালাতে তার টাকার দরকার ছিল, তাই এটা খুব নির্মম একটা পরিস্থিতি ছিল", বলেন রেহানা।
তবে এ আর রহমানও তার জীবনকে বদলে দেওয়া সেই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কথা বলেছিলেন। তার ভাষ্যে, "এটা খুবই কঠিন একটা সিদ্ধান্ত ছিল যে আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও স্কুল ছেড়েছিলাম, আর ভাবছিলাম এবার আমার কি হবে?"
এ আর রহমান ১১ বছর বয়স থেকেই সঙ্গীত জগতে কাজ করতে শুরু করেন। একই চ্যানেলকে দেওয়া আরও একটি সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, "আমার শৈশবটা স্বাভাবিক ছিল না। আমি অনেকটা নিভৃতে থাকতাম। আমার বাবার যেখানে চিকিৎসা হচ্ছিল, আমি সেই হাসপাতালগুলোতে থাকতাম। ১১ বা ১২ বছর বয়সে আমি কাজ করতে শুরু করি। বাইরে যাওয়া বা খেলাধুলার সুযোগ আমার ছিল না। তবে আমার ব্যক্তিগত সময় ছিল, যার অনেকটাই আমি গানের পেছনে ব্যয় করেছি। আর সেটাই আমার জন্য এক প্রকার আশীর্বাদ ছিল।"