খুলনা মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের মারধর, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থিত ব্লু স্কোয়ার মার্কেটে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ওই মার্কেটের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্ণার নামের একটি ওষুধের দোকানে এক শিক্ষার্থী ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। তবে দোকানদার অতিরিক্ত মূল্য চাওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করেন। তখন তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদাররা জড়ো হয়ে তাদের ওপর হামলা করেন।
অন্যদিকে ওষুধের দোকানদারদের দাবি, ওই শিক্ষার্থী ৭০ টাকার ওষুধ কেনার পর মোট দামের উপর ১০ শতাংশ কমিশন চেয়েছিলেন। তবে দোকানদার ওই কমিশন দিতে রাজি না হওয়ায় দু'জন বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে মেডিকেল কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ওই দোকানে ভাঙচুর চালায়।
ওষুধ ব্যবসায়ীদের সাথে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফায় সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোনাডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক সুকান্ত দাস বলেন, "পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাৎক্ষণিক দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্তি রয়েছে।"
সংঘর্ষের পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আহত অবস্থায় সেখানে ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর; এই শিক্ষার্থীরা হলেন- সবুজ সরকার, আনান, নাফিজ ফুয়াদ, হাফিজ, তাহসিম, মাহাদী ও দেব চৌধুরী।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, "আমাদের শিক্ষার্থীদের খুব বাজেভাবে মারা হয়েছে। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।"
এ ঘটনার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. জ্যোতির্ময় বৈরাগী বলেন, "আমাদের ওপর যারা হামলা করেছে তারা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।"
অন্যদিকে, হামলার পর আপাতত দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতালে সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
সেখানে দোকান রয়েছে ওষুধ ব্যবসায় সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েলের। তিনি বলেন, "হামলার ঘটনায় আমাদের ৯ জন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। শিক্ষর্থীরা একটি দোকানের অভ্যন্তরের ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। অন্যান্য দোকানের শাটার ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।"
"যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে," জানান তিনি।
এদিকে, এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপ-পরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফিজ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, "আমরা চাই প্রচলিত আইন মোতাবেক পুলিশ যেন এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।"