পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ ভারতের
আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত সরকার। শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। এই শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর হবে।
অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে সবজিটির রপ্তানির ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়।
গত বছর দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ভারতের বার্ষিক খুচরা মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে ৭.৪৪ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। জুনে দেশটির বার্ষিক খুচরা মূল্যস্ফীতি ছিল ৪.৮৭ শতাংশ।
দেশটির খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১১.৫১ শতাংশে পৌঁছেছে। ভোক্তাদের মোট ব্যয়ের অর্ধেকই হয় খাবার কিনতে।
ভারতের ভোক্তাবিষয়ক দপ্তরের ওয়েবসাইটে পাওয়া মূল্যের তথ্য অনুসারে, শনিবার (১৯ আগস্ট) সারা ভারতে পেঁয়াজের গড় খুচরা মূল্য ছিল কেজিতে ৩০.৭২ রুপি, যা গত বছরের চেয়ে ২০.৭৫ শতাংশ বেশি। এক মাস আগে সারা ভারতে দৈনিক খুচরা পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ২৭.২১ রুপি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ালেই অভ্যন্তরীণ বাজারে সবজিটির দাম অনেক বেড়ে যায়।
ভারতের বাণিজ্য অধিদপ্তরের পোর্টালে দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে এপ্রিল-জুনের মধ্যে দেশটির পেঁয়াজ রপ্তানি ৬.৩৮ লক্ষ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬.৫১ শতাংশ বেশি। গত বছরের এই সময়ে দেশটি ৫.০৪ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানি করেছিল।
চলতি বছরের জুনে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আরও অনেকটা বেড়েছে। জুন মাসে দেশটি ২.৯২ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৯.৫৬ শতাংশ বেশি।
২০২৩ সালের এপ্রিল-জুন সময়কালে ভারত ৬৫টি দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১.৩৯ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ ছাড়াও মালয়েশিয়া (১.০৭ লক্ষ মেট্রিক টন), সংযুক্ত আরব আমিরাত (০.৯০ লক্ষ মেট্রিক টন), শ্রীলঙ্কা (০.৮০ লক্ষ মেট্রিক টন) ও নেপাল (০.৩৯ লক্ষ মেট্রিক টন) ভারতীয় পেঁয়াজের শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে।
ভারত সরকার গত কয়েক মাস ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। টমেটো, পেঁয়াজ, মটর, বেগুন, রসুন ও আদাসহ ভারতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কিছু সবজির দাম গত কয়েক মাসে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এছাড়া গম, আটা, চাল ও ডালের দামেও মূল্যস্ফীতির প্রবণতা দেখা গেছে।
এল নিনোর আবহাওয়ার প্যাটার্নের কারণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম থাকায় এবারের আগস্ট এক শতাব্দীর বেশি সময়ের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে শুষ্ক আগস্ট হতে যাচ্ছে।
১৯৯১ সালে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে এ বছরের আগস্টের বৃষ্টিপাত সবচেয়ে কম হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে ধান থেকে শুরু করে সয়াবিন পর্যন্ত গ্রীষ্মের প্রায় ফসলের ফলনই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বেড়ে যেতে পারে।