ফরিদপুরে মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসক-মৃতের স্বজনদের মধ্যে মারামারি, আহত ২১
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ ২১ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- হাসপাতালের স্টাফ অর্ণব (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার মাহমুদুল (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার শামিম (২৪), ইন্টার্ন ডাক্তার রোকন (২৪), ইন্টার্ন ডাক্তার শিহাব (২৪), ইন্টার্ন ডাক্তার এজাজ (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার মহিন (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার শাকিব (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার পাভেল (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার ইসতেফার (২৪), ইন্টার্ন ডাক্তার জাহিদ (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার সাব্বির(২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার ফরহাদ (২৬)।
তারা সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রাবাসে থাকেন। ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত স্বজনরা হলেন- মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি আলমগীর বিশ্বাস (২৮), তৌহিদ বিশ্বাস (২৫), আলিফ খান (১৪) ও হামজা খান (১২), মেয়ে জেসমিন (৪২), সাবিনা ইয়াসমিন (৫০) ও রেবেকা সুলতানা মনি (৩৫) ও স্ত্রী হালিমা।
আহতদের মধ্যে চারজনকে পুলিশ হেফাজতে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে ফরিদপুর সদর উপজেলার কমলাপুরের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খান (৯৫) নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পরে তিনি মারা যান।
এ নিয়ে ডাক্তার ও স্বজনদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
মৃত ব্যক্তি নয়ন খানের বাড়ি হাসপাতালের কাছে হওয়ায় তাদের আত্মীয়-স্বজন হাসপাতালে এসে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও স্টাফদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খানের নাতি আলমগীর বিশ্বাস বলেন, "রাত ১২টার দিকে নানার শ্বাস কষ্ট হলে নার্সদের জানাই। তারা ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসককে জানাতে বলেন। এরপর ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত চিকিৎসককে বলি রোগীকে ওয়ার্ডে গিয়ে একটু দেখার জন্য এবং পরে একটু অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থাই নেননি। কিছুক্ষণ পর এসে দেখি আমার নানা মারা গেছেন।"
আলমগীর আরও বলেন, "ডাক্তারদের সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে মা আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে একটি বাথরুমে আটকে রাখেন। এরপর প্রায় ৫০-৬০ জনের মতো এসে বাথরুম থেকে বের করে আমার ওপর হামলা চালায়।"
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, "খবর পেয়ে রাতেই পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। আহতরা আশঙ্কামুক্ত। মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনদের থানায় আনা হয়। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা স্বাভাবিক আছে। চিকিৎসকরা সকালে সভায় বসেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।"
এ বিষয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক বলেন, "আমি হাসপাতালের বাইরে আছি। ছুটিতে আছি। তবে মারামারির কথা জানতে পেরেছি। বিস্তারিত জেনে পরবর্তীতে জানানো সম্ভব হবে।"