নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আগামী ১৫ বছরে ৭৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আগামী ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৭৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। তিনি বলেন, 'নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আগামী ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৭৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।' সরকার সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
'এনার্জি পলিসি: এনশিউরিং অ্যাকসেস টু অ্যাফোর্ডেবল, রিলায়েবল অ্যান্ড মডার্ন এনার্জি সার্ভিস অ্যাট টুয়ার্ডস আ রেজিলিয়েন্ট সাউথ এশিয়া: রিজিয়নাল ক্লাইমেট সামিট ২০২৩' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহার রীতি একেক দেশে একেক রকম। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে সফল রূপান্তরের জন্য সমন্বিত ও সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
'নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে সোলার পাওয়ার প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এতে প্রচুর জমি লাগে, যার ফলে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে বড় আকারে সোলার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা দুরূহ। প্রযুক্তির অবাধ বিচরণ ও গবেষণার দ্বারা এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা যেতে পারে।'
বাংলাদেশ সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন, জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধিতে নানাবিধ নীতি ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। এসব উদ্যোগ ও নীতির মধ্যে আছে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা, মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান, সোলার এনার্জি রোডম্যাপ, সোলার ইরিগেশন-এর রোডম্যাপ ও নাবায়নযোগ্য জ্বালানি পলিসির আওতায় নাবাযণযোগ্য জ্বালানির প্রসারের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
সরকার সোলার ইরিগেশন পাম্প, সোলার স্ট্রিট লাইট, সোলার ড্রিংকিং ওয়াটার সিষ্টেম, সোলার মিনি গ্রিড, বায়োমাস প্ল্যান, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ ইত্যাদি নিয়েও কাজ করতে বলে জানান তিনি।
নসরুল হামিদ বলেন, ৬ মিলিয়ন সোলার হোম সিষ্টেমের মাধ্যমে ২০ মিলিয়ন মানুষকে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, পরিচ্ছন্ন ও সবুজ জ্বালানির প্রতি প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে দশটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাতিল করেছে সরকার। এর ফলে ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চলে গেছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১০৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সেমিনারে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পরিচালক ড. মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।, ডেলিগেশন অব দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন টু বাংলাদেশের গ্রিন ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট টিম লিডার ইদয়ুইন কুককুক, গ্রামীণ ফোনের সিসিএও হেনস মার্টিন, সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর)-এর পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী। সেশনটি পরিচালনা করেন এ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।