লকডাউনে দক্ষিণ আফ্রিকায় বেকারত্বের হার বেড়েছে
দক্ষিণ আফ্রিকায় লকডাউনের প্রথম দুই সপ্তাহে ১.৯ মিলিয়ন Unemployment Insurance Fund (UIF) বা বেকার বীমা তহবিলে সাহায্য চেয়ে আবেদন পড়েছে। দেশটিতে সবচেয়ে বেশি কেপটাউনে - বেকারত্বের হার বেড়ে শতকরা পঞ্চাশ শতাংশ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির প্রশাসন।
গত মঙ্গলবার জাতীয় পরিষদ কাউন্সিলকে (এনসিওপি) কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধের ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে অবহিত করেছেন দেশটির সমবায় প্রশাসন ও ঐতিহ্যবাহী বিষয়ক মন্ত্রী নোকাসাজনা দালামিনী জুমা।
এসময় তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এখন একটি অর্থনৈতিক সংকটও হয়ে উঠছে। এবং এর ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যালেঞ্জগুলো আরও বেড়েছে। আমরা এমনিতেই ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সঙ্গে লড়ছি, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এই সমস্যাগুলো যেন সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
দালামিনী জুমা আরও বলেন, আমরা এখন এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি যেখানে এখন আমাদের লকডাউন শিথিল করতে হবে। যদিও রাষ্ট্রপতি বলেছেন যে লকডাউন এখনই তুলে দেওয়া ঠিক হবে না কারণ আমরা সংক্রমণের প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই অবস্থায় অর্থের জন্য আমাদের দেশকে বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানের কাছে যেতে হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি হ্রাস পেয়েছে। এটা কেবলমাত্র লকডাউনের কারণে নয় বরং সার্বিকভাবেই আমাদের ডাউনগ্রেড হয়েছে এবং আমাদের প্রায় এক হাজার সংস্থার নিয়োগকর্তারা বেকার বীমা তহবিলে আবেদন করেছেন।
বিশেষত পর্যটন খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ আমরা সীমান্ত, আকাশপথ সব বন্ধ করে দিয়েছি। ফলে এখাতের কোন ব্যবসা বাঁচবে না। এতে করে দুর্বল পরিবারগুলোতে ইতোমধ্যেই আয়ের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
দালামিনী জুমা বলেন, পৌরসভার রাজস্ব আয়ও কমে গেছে। সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মৌলিক। তবে পৌরসভাগুলো এটি চাহদানুযায়ী সরবরাহ করতে পারেনি, তাই জাতীয় শাখাগুলোতেও সেবার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ এ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিক্রিয়া ও কার্যপদ্ধতি চূড়ান্ত স্তরের বিধিনিষেধের অধীনে পরিবর্তিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং রাষ্ট্রপতির জাতীয় করোনাভাইরাস কমান্ড কাউন্সিল তার পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করার পথে রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার দুটি মানদণ্ডকে কেন্দ্র করে লকডাউনের প্রতি ঝুঁকি-সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এগুলো হল- সংক্রমণের হার এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তৎপরতা।
করোনভাইরাসের আর্থ-সামাজিক প্রভাবও আমাদের দেখতে হবে। অর্থনীতির পুনর্গঠনের সময় আমাদের অবশ্যই টেকসই এবং স্থিতিশীল সম্প্রদায় গঠনের দিকে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, লকডাউন চলাকালীন সময়ে সরকার মামলা-মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। আমরা সরকারের বিধিবিধানকে চ্যালেঞ্জ জানানো অনেক ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মোকাবিলা করছি।
গণমাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জুয়েলি মখিজে ইতোমধ্যে বলেছেন, কোভিড-১৯ এখনও একটি বিপদ হিসাবে রয়েছে যা প্রথমদিকে ঘটে যাওয়ার চেয়ে এখন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এখানে টেস্টিং কিটের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। মোট ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭৭৭ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৯৯ টি পরীক্ষার (২৩%) কমিউনিটি স্ক্রিনিং টেস্টিং থেকে এবং ৫৫৩টি (৪২%) পাবলিক সেক্টরে ছিল।
তিনি আরও জানান, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও টেস্টিং কিটের ঘাটতি রয়েছে এবং আমরা এমন সংকটে পড়ছি যেখানে সরবরাহকারীরা আমাদের চাহিদা মেটাতে পারছে না।প্রত্যেকেই এখন কিট পেতে চেষ্টা করছে এবং আমরা ইতোমধ্যে একটি বিশাল ব্যাকলগ দেখতে পাচ্ছি।
আমাদের সমাজকে বুঝতে হবে যে কোভিড-১৯ এখন আমাদের সীমাবদ্ধতা হয়ে উঠছে। এবং এর প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বব্যাপী সহায়তাকারী সংস্থাগুলো আমাদের অনুরোধের জবাবে সহানুভূতি জানাচ্ছে, কিন্তু এরচেয়ে বেশি কিছু করতে পারছে না।